নিয়ামতপুরে কালবৈশাখী তাণ্ডবে বিদ্যুৎ ও খাবার পানির জন্য হাহাকার

নওগাঁর নিয়ামতপুরে গত শুক্রবার রাতে কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার বেশিরভাগ অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাস্তা ও বাড়ির পাশের গাছ উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎতের লাইন ছিড়ে ও খুঁটি ভেঙ্গে পড়ে

নিয়ামতপুরে কালবৈশাখী তাণ্ডবে বিদ্যুৎ ও খাবার পানির জন্য হাহাকার

তৈয়বুর রহমান নিয়ামতপুর নওগাঁ প্রতিনিধিঃনওগাঁর নিয়ামতপুরে গত শুক্রবার রাতে কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার বেশিরভাগ অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাস্তা ও বাড়ির পাশের গাছ উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎতের লাইন ছিড়ে ও খুঁটি ভেঙ্গে পড়ে। এখনো উপজেলার প্রায় ৩লক্ষ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। দুইদিন পরেও স্বাভাবিক হয়নি বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা। 

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা এমন চিত্র। বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ইন্টারনেট সংযোগ, দেখা দিয়েছে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনা। দুর-দুরান্ত থেকে ভ্যান যোগে, পায়ে হেঁটে পানি নিয়ে এসে রান্নার কাজ করছে বাড়ির মহিলারা।

উপজেলার নন্দিগ্রাম এলাকার মহিলারা আজকের পত্রিকাকে বলেন, শনিবার থেকে পানির অভাবে রান্নাসহ গরু-বাছুরের পানি খাওয়া নিয়ে চরম ভোগান্তিতে রয়েছি। পানি ছাড়া কোন কাজই করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া আমাদের এলাকায় প্রায় টিউবওয়েল অকেজো। আজ সকালে গ্রামের যুবক কিছু ছেলেরা ডেকোরেটর থেকে জেনারেটর ভাড়া করে এনে আমাদের গ্রামের পানির সমস্যা দুর করেছে। 

নন্দিগ্রামের সমিন্দ্র বলেন,আমার পরিবারে মা-চাচির পানির সমস্যার কারনে মনে হলো কিছু একটা করা দরকার। যেমন চিন্তা তেমন কাজ, কালিতলা বাজারে ডেকোরেটরের দোকানে গিয়ে জেনারেটর নিয়ে এসে আজ সকালে গ্রামের প্রত্যেক পরিবারকে ৫০টাকা দিন চুক্তি হিসেবে পানি সরবরাহ শুরু করি। টাকা কেন নেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি জেনারেটর ভাড়া করেছি, তাছাড়া তেল কিনতে হয়। এসব খরচ তোলার জন্যই মূলত টাকা নেওয়া হচ্ছে। 

পতকৈইল মোড়ের চা ব্যবসায়ী রায়হান বলেন, আমাদের স্টল চালাতে অনেক পানি লাগে। দোকানের প্লেট-বাসন পরিস্কার, কাস্টমারের খাবার পানিসহ পথচারীদের পানি খাওয়ানো সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ আর পানি নিয়ে রীতিমত হিমসিম খাচ্ছি। বড় সমস্যা হলো আসেপাশে কোন টিউবওয়েল নেই। 

হাজিনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য সুলতান আহমেদ হেলাল বলেন, আমি অত্র এলাকার প্রায় গ্রাম পরিদর্শন করেছি। প্রত্যেক গ্রামের একই সমস্যা পানি আর বিদ্যুৎ। গত দুইদিনে  যতোটুকু পানি সংরক্ষণ ছিলো তা শেষ হয়ে গেছে। এলাকার কোন গ্রামে টিউবওয়েল না থাকায় এমন ভোগান্তিতে পড়েছে প্রতিটি পরিবার। আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাই প্রত্যেক গ্রামে অন্তত একটি করে হলেও ছোলার ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করা দরকার। এতে করো প্রকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সহায়ক হবে।

নওগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ নিয়ামতপুর শাখার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মেশবাহুল হক বলেন, গত শুক্রবার রাতের ঝড়ে বিদ্যুতের অনক খুঁটি, তার, মিটার ছিড়ে গেছে। আমাদের পল্লী বিদ্যুতের টিমসহ নওগাঁ, জয়পুর হাট থেকে আসা সকল সদস্য বিভিন্ন এলাকায় দিনরাত নিরবচ্ছিন্ন ভাবে কাজ করে চলেছে। গতকাল বিকালে মেইন লাইন চালু করতে সক্ষম হয়েছি। আজ সন্ধার মধ্যে হয়তো মোটামুটি উপজেলার সকলএলাকায় বিদ্যুতের লাইন চালু করা সম্ভব হবে।