‎পবিপ্রবিতে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল

প্রফেসর জিল্লুর রহমানের মৃত্যু বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও মানবিক গুণাবলি তাঁকে করে তুলেছিল অনন্য

‎পবিপ্রবিতে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল

মোঃ সজিব সরদার পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) ভাষা ও যোগাযোগ বিভাগের চেয়ারম্যান, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা এবং রিজেন্ট বোর্ড সদস্য, বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী প্রফেসর ড. মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে এক শোকাবহ পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার আজ গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় তাঁকে স্মরণ করেছে।

‎রবিবার(২২ জুন)সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় শোকসভা ও দোয়া মাহফিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও এগ্রোনমি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. আবু ইউসুফের সঞ্চালনায় আয়োজিত এই স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান এবং কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আব্দুল লতিফ।

‎স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনএফএস অনুষদের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. মোঃ রবিউল হক, হর্টিকালচার বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর  ড. মাহবুব রব্বানী, বিবিএ অনুষদের সাবেক ডিন প্রফেসর বদিউজ্জামান,এগ্রিকালচারাল বোটানি বিভাগের প্রফেসর এম জহুরুল হক, রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ মামুন-উর-রশিদ, এম কেরামত আলী হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন হোসেন, বিবিএ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ সুজাহাঙ্গীর কবির সরকার, প্রক্টর প্রফেসর আবুল বাশার খান, সিএসই  অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. খোকন হোসেন, ভাষা ও যোগাযোগ বিভাগের প্রফেসর মোঃ মেহেদী হাসান, জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর মোঃ মাহফুজুর রহমান সবুজ, ডেপুটি রেজিস্ট্রার ড. আমিনুল ইসলাম টিটো, ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোঃ আবুবকর সিদ্দিক, সয়েল সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এবিএম সাইফুল ইসলাম, সহকারী রেজিস্ট্রার এম. রিয়াজ কাঞ্চন শহিদ, মোঃ আবু তাহের উজ্জ্বল, কর্মচারী মোঃ মাহাবুব হোসেন, পবিপ্রবি শাখা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক ও ফিসারিজ অনুষদের  শিক্ষার্থী সোহেল রানা জনি, বিবিএ অনুষদের  ছাত্র সোলায়মান মান্না, আইন অনুষদের নুরুন্নবী, এনএফএস শিক্ষার্থী জান্নাতুন নাঈম জীবন, সিএসই অনুষদের মোঃ মহিবুল্লাহ এবং বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিগণ।

‎প্রধান অতিথি মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বক্তব্যে বলেন, “প্রফেসর জিল্লুর রহমানের মৃত্যু বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও মানবিক গুণাবলি তাঁকে করে তুলেছিল অনন্য। তরুণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে তিনি ছিলেন এক নীরব অনুপ্রেরণা। তাঁর জীবন ও কর্ম আমাদের জন্য এক উজ্জ্বল আদর্শ হয়ে থাকবে। তিনি শুধু একজন শিক্ষক ছিলেন না, ছিলেন এক আলোকবর্তিকা—যিনি সততা, নীতিনিষ্ঠা ও ইসলামী আদর্শে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও শিক্ষাগত পরিমণ্ডলকে আলোকিত করেছেন।

‎বিশেষ অতিথি প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান বক্তব্যে বলেন, “আমরা হারিয়েছি এক অমূল্য সম্পদকে। প্রশাসনিক পরিসরে তিনি ছিলেন কর্মনিষ্ঠ, দূরদর্শী ও দায়িত্ববান এক সাহসী কণ্ঠ। ”তাঁর জ্ঞানের গভীরতা, নেতৃত্বের সক্ষমতা এবং সহকর্মীদের প্রতি আন্তরিকতা অতুলনীয়। এমন একজন গুণী ব্যক্তিত্বকে হারানো সত্যিই শোকাবহ।

‎কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আবদুল লতিফ বলেন, “প্রফেসর জিল্লুর রহমান ছিলেন এক নিরহঙ্কার, শৃঙ্খলাবদ্ধ ও নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষাবিদ। তাঁর কর্মকুশলতা এবং আন্তরিকতা সবসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। 

‎অনুষ্ঠানের সভাপতি রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মোঃ ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন, “প্রফেসর ড. মোঃ জিল্লুর রহমান ছিলেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি ছিলেন সবার জন্য শ্রদ্ধেয়, সহকর্মীদের কাছে নির্ভরতার প্রতীক এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু। তাঁর স্মৃতি ও আদর্শ আমাদের পথচলায় চিরভাসমান থাকবে।

‎স্মরণসভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, প্রফেসর ড. জিল্লুর রহমান ছিলেন এক নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক, দক্ষ প্রশাসক, সুদূরদর্শী সংগঠক এবং ইসলামী মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত এক মহৎপ্রাণ মানুষ। তাঁর পাণ্ডিত্য, প্রজ্ঞা, নেতৃত্বগুণ ও সাহিত্যচর্চা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারকে সমৃদ্ধ করেছে। তিনি ছিলেন শুধু শিক্ষার্থীদের প্রিয় শিক্ষকই নয়, ছিলেন নির্ভরতার প্রতীক ও প্রেরণার বাতিঘর।

‎স্মরণসভা শেষে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এক দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাতে তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে আল্লাহর দরবারে তাঁর জান্নাতুল ফেরদৌস লাভের প্রার্থনা করা হয়।