বাঘায় অভয়াশ্রমের অতিথি পাখি নিধনে ব্যস্ত এলাকার মানুষ

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী ইউনিয়ন এর খোর্দ্দ বাউসা এলাকায় বিগত কয়েক বছরের ন্যয় এবারেও বাসা বেধেছে অতিথি পাখি

বাঘায় অভয়াশ্রমের অতিথি পাখি নিধনে ব্যস্ত এলাকার মানুষ

বাঘা রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী ইউনিয়ন এর খোর্দ্দ বাউসা এলাকায় বিগত কয়েক বছরের ন্যয় এবারেও বাসা বেধেছে অতিথি পাখি। সেই অতিথি পাখি নিধনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ওই এলাকার মানুষসহ পাশ্ববর্তী এলাকার মানুষ জন।

খোর্দ্দ বাউসা গ্রামটি অতিথি পাখির অভয়াশ্রম হিসেবে পরিচিত। প্রতি বছর শীতকালে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পাখিগুলোর ডানা মেলতে দেখা যায়। এই পাখিগুলোর কারণে আমবাগানে স্থানীয় ও বাইরের পর্যটকদের ভিড় বাড়ে, পাখিপ্রেমী উৎসুক মানুষের কাছে একটি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। যেখানে তারা পাখির সৌন্দর্য উপভোগ করেন।

এর আগে আনুমানিক প্রায় ৪ থেকে ৫ বছর আগে এই অতিথি পাখি নিয়ে সরকারের ছিলো নানা তোরজোড়, যা চোখে পড়ার মতো। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানে থাকা পাখির বাসা না ভাঙার জন্য আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই এলাকা কেন অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হবে না,তাও জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন আদালত। আদেশে আদালত অভয়ারণ্য ঘোষণার কারণে বাগানমালিক বা ইজারাদারের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা তা নিরীক্ষা করে ৪০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে রাজশাহী জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন । এরপর প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরে খোর্দ্দবাউসা গ্রামে বাগান মালিকদের ক্ষতিপূরণের অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব দীপক কুমার চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত একটি পত্রে বন অধিদপ্তর থেকে পাঁচজন বাগান মালিক কে পাখির বাসার জন্য মোট ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা ইজারা বাবদ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কয়েক বছর ধরে শামুকখোল অতিথি পাখি এই বাগানে আসায় আম বাগানের ক্ষতি হওয়ায় এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়।

তবে এইবার নতুন করে এই অতিথি পাখি নিয়ে নেই সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের গুরুত্ব। প্রতিদিন চলছে পাখি নিধনে মহা-উৎসব। পালা করে কয়েক গ্রামের মানুষ মেতেছে এই পাখি নিধনের কাজে। গোপন সুত্রে জানা যায় পাশ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের মানুষও খোর্দ্দ বাউসা এলাকায় রাতে অবস্থান করেন গভীর রাত আনুমানিক ৩ টা বা ৪ টার দিকে তারা গাছে উঠে পাখি ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের শিকার করে এবং সেই পরিমাণটাও বিশাল। সেই পাখি গুলো নাকি ভোরের দিকে বস্তুা ভরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ওই এলাকার মানুষদেরও কিছু অংশ দেয়।

পাখিগুলো তারা কি করে জানতে চাইলে বলেন, শিকারিরা সেই গুলা মাংস হিসেবে খেয়ে থাকেন। তবে তারা বাজারে বিক্রি করেন কি না তা জানা যায়নি।

সরেজমিনে গিয়ে ওই এলাকার মানুষদের পাখি শিকারে বিষয়ে জানতে চাইলে কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি।

পথচারী কয়েকজনের সাথে পাখি শিকারে বিষয় কথা বললে একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন যে আমরাও এই বিষয় টি জানতে পেরেছি যে অন্য এলাকার মানুষ এসে এখানে পাখি শিকারে করে নিয়ে যাচ্ছেন, যা অত্যন্ত দুঃখ জনক।"