চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা নদীতে বিলীন শতশত ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি,হুমকির মুখে দু'পাড়ের কয়েকশ স্থাপনা
গত ১৫দিন ধরেই ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে শত শত কৃষি জমি এবং বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হচ্ছে
ডি এম কপোত নবী,চাঁপাইনবাবগঞ্জ।চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিবগঞ্জ উপজেলার পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। এতে উপজেলার পাঁকা ইউনিয়ন ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড জাইটপাড়া, বোগলাউড়ী লক্ষ্মীপুর এবং দূর্লভপুর ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড চরজগনাথপুর, আইয়ুব আলী বিশ্বাসপাড়া, পন্ডিতপাড়া এবং মনোহারপুর তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনে প্রায় ১০০ বসতবাড়ি ও ১৫ হাজার বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে নদীর দু'পাড়ের কয়েকশ স্থাপনা।
নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা বলেন, গত বছরে নদী ভাঙনের কারণে শতশত কৃষি জমিসহ বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে, এখন আবার শুরু হয়েছে। গত ১৫দিন ধরেই ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে শত শত কৃষি জমি এবং বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হচ্ছে।
পাঁকা ইউনিয়নের বাসিন্দা মোহা. আলমগীর বলেন, গত নয় বছর থেকেই এ সময় নদী ভাঙন এর কারণে বাড়ি ভেঙে অন্য স্থানে নিয়ে যেতে হয় এবং হাজার হাজার কৃষিজমি ও বসতবাড়ি বিলীন হচ্ছে কিন্তু দেখার কেউ নাই, পাই না কোনো সরকারি সুবিধা, এলাকাবাসীর জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী।
সরজমিনে শিবগঞ্জ উপজেলার নদী ভাঙন এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলতে গেলে ঐ এলাকার আল আমিন বলেন, আমাদের বাড়ি পাঁকা ইউনিয়ন। নদীভাঙনে আমাদের এলাকার মানুষ খুব কষ্টে রয়েছে। প্রতিদিন শতশত কৃষি জমি কিংবা বাড়িঘর নদীতে ভেঙে পড়ছে।
গ্রামবাসী আরও বলেন, জিও ব্যাগ দিয়ে নদীভাঙন রক্ষা হবে না। জিওব্যাগ দিয়ে নদীভাঙন রক্ষার ক্ষেত্রে পাঁকা ইউনিয়ন ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড এর এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। সরকারি ভাবে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি দ্রুত এই গ্রামগুলোকে রক্ষার জন্য। জিওব্যাগ বা অন্য পন্থা থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী। ফলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ময়েজ উদ্দিন বলেন, শুনেছি নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে জিওব্যাগ দিয়ে নদীভাঙন রক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ চলছে।
মনোহরপুর থেকে উজিরপুর সাড়ে ১২ কিলোমিটার স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের কাজ আরম্ভ করার জন্য প্রজেক্ট তৈরি করা হচ্ছে। প্রায় পনেরশো কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রজেক্টে ডিসেম্বর মাস থেকে জানুয়ারি মাসে এ প্রজেক্টটি দাখিল করবো। এ প্রজেক্ট প্রায় পনেরশ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। সেখানে নদীভাঙন আরো ভিতরে চলে না যায় এজন্য অস্থায়ীভাবে জিওব্যাগ দিয়ে ঠেকানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এদিকে ঐ এলাকায় বসবাসকারী অনেকেই ঘরবাড়ি ভেঙে অনত্র চলে যাচ্ছে। অনেকে কবরও নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। তাই এলাকাবাসী অতি দ্রুত ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।