আনিকার স্বপ্ন ছিল বিচারক হওয়ার-ফিরলেন লাশ হয়ে 

গত জুলাই মাসের কোটাবিরোধী আন্দোলনে ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

আনিকার স্বপ্ন ছিল বিচারক হওয়ার-ফিরলেন লাশ হয়ে 

এ.বি.এস রতন স্টাফ রিপোর্টার নওগাঁ: গত জুলাই মাসের কোটাবিরোধী আন্দোলনে ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা । ইচ্ছে ছিল এলাকায় বিচারক হয়ে আসবেন, ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার প্রতি উৎসাহ দিবেন কিন্তু আসতেছে লাশ হয়ে। তাই বিচারক হওয়া আর হলো না, রাস্তায় মাইক হাতে আর কখনও প্রতিবাদী হয়ে দাঁড়াবে না। নওগাঁর বদলগাছীর উপজেলার মিঠাপুর ইউনিয়নের মেধাবী শিক্ষার্থী আনিকা মেহেরুন্নেসা শাহি

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার নিউমার্কেট এলাকা থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে তার গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে ।

মেধাবী ছাত্রীর এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেনা পরিবারের লোকজনসহ প্রতিবেশীরা। তাই ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য অনুরোধ করেছেন ফুফাত ভাইসহ প্রতিবেশীরা।

পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেনের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে আনিকা মেহেরুন্নেসা শাহি ছিল মেজো। বাবার অনেক আদরের ২৪ বছরের এই মেয়ে ছোট থেকেই ছিল মেধাবী। তাই দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২০-২১ সেশনে পড়াশোনা করতেন। ছিলেন কোটাবিরোধী আন্দোলনের সম্মুখ সারির প্রতিবাদী শিক্ষার্থী। সেই জন্য পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলায় গিয়ে শুরু করেছিলেন আন্দোলন। মাইক হাতে অন্যান্য সহপাঠীর সাথে দাঁড়ান রাস্তায়।

রোববার দিবাগত রাত ১১টার দিকে রাজধানীর নিউমার্কেট থানাধীন এলিফ্যান্ট রোডের মকসুদ টাওয়ারের ৮ তলার একটি কক্ষ থেকে আনিকার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বুটেক্সের এক শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

এদিকে নিহত ঢাবির ওই ছাত্রীর মৃত্যু নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। যদিও এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটা শিওর হওয়া যায়নি। তবে তার পরিবারসহ এলাকাবাসীর দাবি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তার মৃত্যুর রহস্য উৎঘাটন হোক।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, নিহত আনিকার চেয়ারম্যান বাবা ফিরোজ হোসেন ছিলেন আওয়ামী লীগের সাথে গভীরভাবে জড়িত। আর এই ৫ আগস্ট তার বাড়িতে যেন কেউ হামলা না করে এমন স্কিনশর্ট এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। আনিকা আন্দোলনে প্রথম সারির হলেও তার বাবার কারণে তাকে বিভিন্ন কটু কথা শুনতে হতো। এমনকি মারাত্মক সাইবার বুলিংয়ের শিকার হতে হয়েছে তাকে। যদিও আনিকা জয়পুরহাটে আন্দোলনের সময় অনেক অ্যাক্টিভ ছিলেন। তারপরও তাদের একটি ফার্মও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, বাবাসহ ফ্যামিলির অনেককে হয়রানি করা হচ্ছে। তার বাবার শাস্তি পাওয়া লাগতেছে এটা তার জন্য ছিল কষ্টদায়ক। তবে যে কারণে হোক, আনিকার মৃত্যুর রহস্যের জট খুলবে এমনটাই দাবি সকলের।

বকুল নামের একজন ফোনে বলেন, আমি গিয়ে দেখি আনিকার মরদেহ ফ্যানের সাথে ঝুলছিল, কিন্তু অর্ধেক মেঝেতে লেগে ছিল। আমার জানামতে একটা ছেলের সাথে তার সম্পর্ক ছিল। তবে আমরা যখন যাই, তখন দেখি লক ভাঙা ছিল। মনে হয় তাকে কেউ নামানোর চেষ্টা করেছিল।