বদলগাছিতে মামা-ভাগ্নের জমা জমির দ্বন্দ্ব খামারির উপর অতর্কিত হামলা মামলা 

নওগাঁর বদলগাছীতে জমি মাপজোঁকের সময় দাঁড়িয়ে থাকা এক খামারীকে মারপিট করে আহত করার ঘটনা ঘটেছে

বদলগাছিতে মামা-ভাগ্নের জমা জমির দ্বন্দ্ব খামারির উপর অতর্কিত হামলা মামলা 

এবিএস রতন স্টাফ রিপোর্টার নওগাঁ:নওগাঁর বদলগাছীতে জমি মাপজোঁকের সময় দাঁড়িয়ে থাকা এক খামারীকে মারপিট করে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। আনোয়ার ও মাসুদ রানা মামা-ভাগ্নে দুই গ্রুপের মধ্যে জমাজমি নিয়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ দ্বন্দ্ব চলে আসছে। দুই পক্ষ কে নিয়ে স্থানীয় মাতব্বররা বিষয়টি নিরসন বসেন।নিরসনেরপর জমির পজিশন বুঝিয়ে দেওয়ার সময় মামা গ্রুপের লোকজন ভাগ্নে গ্রুপের লোকজনের উপর চড়াও হয়। এসময় ব্যবসায়ী মাসুদের এক খামারি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। হঠাৎ আনোয়ার সহ মামা গ্রুপের একাধিক লোকজন সবুজ নামের খামারির উপর অতর্কিত হামলা করেন। 

শনিবার ১৪ ডিসেম্বর উপজেলার মিঠাপুর ইউনিয়নের ভেরেন্ডী বাজারে দরবারের পর জমি মাপজোঁকের সময় ওই খামারীকে আনোয়ার সহ তার লোকজন মারপিট করে আহত করেন এমন অভিযোগ তোলেন স্থানীয়রা ।

মারপিটের শিকার হওয়া খামারীর নাম সবুজ হোসেন (২৮)। তিনি ওই ইউনিয়নের মিঠাপুর (বৌলাপাড়া) এলাকার রহিম উদ্দীনের ছেলে। এঘটনায় ওই দিন রাতেই তার বড় ভাই বুলবুল আহম্মেদ বুলু (৪০) বাদি হয়ে-বিবাদী আনোয়ারসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে বদলগাছী থানায় এজাহার দায়ের করেন। 

বাদি বুলবুল আহম্মেদ বুলুর এজাহারে জানা যায়, মিঠাপুর ইউনিয়নের কান্দা গ্রামের মৃত আলেক উদ্দিনের ছেলে ও ফিড ব্যবসায়ী মাসুদ হোসেন (৪২) এর সাথে ভেরেন্ডী বাজারের এক জমি নিয়ে একই গ্রামের মৃত কাশেমের ছেলে আনোয়ার হোসেন ধলু (৪৮), কুদ্দুস (৫২), ইদ্রিস (৪৩) ও আনোয়ার হোসেনের ছেলে জয় (২৫) সহ অজ্ঞাত ৩-৪ জনের বিরোধ চলছিল। শনিবার মাপজোঁকের এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেন ধলু গালিগালাজ করতে থাকে। আমার ভাই সবুজ গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে এক নং আসামি ক্ষিপ্ত হয়ে তার হাতে থাকা হাসুয়া দিয়ে ভাইয়ের মাথায় কোপ মারে। এতে অল্পের জন্য বেঁচে যায় সবুজ। তবে জখম হয়ে সে মাটিতে পড়ে গেলে অন্যান্য আসামিরা তাদের হাতে থাকা লোহার রড ও লাঠিশোঠা দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। এতে তার চোখসহ বিভিন্ন জায়গায় জখম হয়। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে দেয়। বর্তমানে সবুজ সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন।

ভূক্তভোগী সবুজ হোসেন বলেন,মাসুদ হোসেন একজন ফিড ব্যবসায়ী। আমি একজন খামারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক। শনিবার বিকেলে তাদের জমিজমার মাপজোঁক চলছিল। তাই সেখানে গিয়েছিলাম। গিয়েই মারপিটের শিকার হয়েছি। 

তিনি আরও বলেন, তাদের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ সমাধানের জন্য আনোয়ার নিজেই দরবার ডাকে এবং নিজেই তালবাহানা করতে থাকে। এভাবে প্রায় ২০-২৫ বার দরবার হয়। প্রতিপক্ষের আনোয়ার কখনও হাজির হতোনা। আবার হাজির হলেও বিভিন্ন অজুহাতে সময় নিতো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে স্থানীয়দের সঠিকভাবে সমাধানের জন্য বলা হয়। আজ আবারও দরবারের দিন ছিল। সেই অনুযায়ী স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাকসহ কয়েকজন মিলে একটি দরবার বসে। দরবার করে উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাক শান্তির লক্ষে ৭ দশমিক ৭৩ অংশ ভাগ করে দিয়ে মাপজোঁকের অনুমতি দেয়। সেই অনুযায়ী মাপজোঁক চলছিল। কিন্তু সেটা মানতে নারাজ প্রতিপক্ষের আনোয়ার গং। তাই গালিগালাজ করতে থাকে। আমি দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। এবং গালিগালাজ করতে নিষেধ করেছি। তাতেই কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার মাথায় এসে আনোয়ার হাসুয়া দিয়ে কোপ মারে। তবে অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছি কিন্তু তারা লাঠিসোটা দিয়ে আমাকে মারপিট করে আহত করে। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই। 

মিঠাপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আশরাফুল আলম বলেন ১৬ বার বৈঠক শেষে ১৭বার বৈঠকে ফাইনাল রায় হয়েছে প্রায় পৌনে ৮ শতাংশ করে জমি বন্টন হবে এবং বন্টন শুরু হয় ঠিক ওই মুহূর্তে অতর্কিত হামলায় শিকার হয় সবুজ হোসেন 

মারপিটের ঘটনার বিষয়ে আনোয়ার হোসেন এর কাছে মুটোফোনে জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।

 তিনি বলেন,মাসুদ আমার সম্পর্কে ভাগিনা। সে আমার জমি দখলে নেওয়ার পাঁয়তারা করছিল। আর মাসুদের খামারি সবুজকে মারার কোনো প্রশ্নই আসেনা। 

বদলগাছি থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোঃ শাহাজাহান আলী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এক পক্ষ মামলা করেছে। মামলার প্রেক্ষিতে আসামি ধরার জন্য অভিযান চালানো হবে। তবে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।