চাঁপাইনবাবগঞ্জে এসএসসি-৮৪ ব্যাচের বন্ধুদের মিলন মেলা
বন্ধুত্বের টানে, বন্ধুর পানে’ এই শ্লোগান ধারণ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে এসএসসি- ৮৪ ব্যাচের বন্ধুদের মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বদিউজ্জামান রাজাবাবু স্টাফ রিপোর্টার:বন্ধুত্বের টানে, বন্ধুর পানে’ এই শ্লোগান ধারণ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে এসএসসি- ৮৪ ব্যাচের বন্ধুদের মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২২ নভেম্বর) সকালে ভোলাহাট মহিলা সরকারি কলেজ মিলনায়তনে দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৪১ বছর পর ৮৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়। অনুষ্ঠানে শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নয়, সারা দেশের এসএসসি-৮৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও আমন্ত্রিত ছিল।
পবিত্র কোরআন তেলওয়াতের মদ্ধ দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর সৃজনশীল নানান আয়োজন শেষে মধ্যাহ্ন বিরতি দেওয়া হয় বিরতি শেষে পরিচিতি পর্ব ও আলোচনা সভা, নাচ-গানের মাধ্যমে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠে। এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পুরো আয়োজনে আনে ভিন্ন মাত্রা।
আয়োজকরা জানান ২০২২ সাল থেকে ‘আমরা এসএসসি-৮৪ শিরোনামে শাহনেওয়াজ খান সিনা ও ডা. সৈয়দ মাযহারুল ইসলাম তরুসহ কয়েকজন বন্ধুদের নিয়ে একটি ফেসবুক পেইজ খোলা হয়। গ্রুপে জেলা-উপজেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে ১৯৮৪ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে এমন বন্ধুদেরকেই শুধু যুক্ত করা হয়। এই ব্যানারেই আজ অনুষ্ঠান হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রায় ১০০জন বন্ধু উপস্থিত ছিলেন বলে আয়োজক সূত্রে জানা গেছে।

দীর্ঘদিন যোগাযোগ না থাকায় অনুষ্ঠানে এসে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। খোঁজখবর নেন পুরনো বন্ধু এবং তাদের পরিবার-পরিজনের। অনেকেই এ সময় স্কুলজীবনের স্মৃতিচারণায় মেতে ওঠেন। অনেকে বহুদিন পর প্রিয় বন্ধুকে পুনরায় কাছে পেয়ে বুকে জড়িয়ে ধরেন। এভাবে অনুষ্ঠানস্থল এক মিলনমেলায় পরিণত হয়।
আমরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৮৪ এর আহ্বায়ক মো. আক্তারুল ইসলাম বলেন, ‘বন্ধুত্বের টানে, বন্ধুর পানে আমরা ৮৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ ৪১ বছর পর একত্রিত হয়েছি। এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
আয়োজকদের অন্যতম ও এসএসসি-৮৪ এর সদস্য সচিব মো. রাকিব উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এই মিলন সকলের অংশগ্রহণ আনন্দ বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। যারা আজ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন সবাইকে শুভেচ্ছা, এক সময় আমরা একসঙ্গে পড়াশোনা করলেও, জীবিকার তাগিদে অনেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি। কেউ ঢাকা, কেউ চট্টগ্রাম- জীবনের এমনই নিয়ম। এখন হয়তো কালেভদ্রে সেসব বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়। ফলে আমরা চেয়েছিলাম সাপ্তাহিক ছুটিতে সবাই একত্রিত হতে। সবাইকে পেয়ে অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা হলো।

মিলন মেলার অন্যতম উদ্যোক্তা শাহনেওয়াজ খান সিনা বলেন, ‘কৈশোরের বন্ধুত্ব কখনও হারায় না। কর্মব্যস্ততায় আমরা হয়তো ছেলেবেলার কথা ভুলে থাকি, কিন্তু ছেলেবেলা কখনও মুছে ফেলা যায় না। এ কারণে জীবন চলার পথে যতো মানুষের সঙ্গেই বন্ধুত্ব হোক না কেন, ছেলেবেলার বন্ধুত্বের মতো তারা কখনও স্মৃতিযোগ্য নয়। জীবনে একজন হলেও প্রকৃত বন্ধুর প্রয়োজন। আর স্কুল লাইফের ফ্রেন্ডই হতে পারে সেই প্রকৃত বন্ধু। এ কারণেই আমরা সবাই মিলে চেয়েছিলাম এমন একটা আয়োজন করতে যেখানে সবাই একসঙ্গে বহুদিন পর একত্রিত হতে পারবো। এমন সফল একটি আয়োজন আমার ছেলেবেলা, আমার স্কুলজীবনকে ফিরিয়ে দিয়েছে। আমরা আরো বড় পরিসরে বন্ধুদের নিয়ে স্বপ্ন দেখতে চাই। আজকে সেই স্বপ্নের পথে আমাদের চলা শুরু হলো।
আয়োজকরা জানান, আমরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৮৪ ভবিষ্যতে সামাজিক কার্যক্রমেও অংশ নেবে। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া বন্ধুদের সহায়তা, অসচ্ছল বন্ধুদের মেধাবী সন্তানদের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেওয়া, বন্ধুদের যে কোনো বিপদে পাশে থাকাসহ দেশের যে কোনো দুর্যোগে মানবিক কর্মকাণ্ডে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করবে।




