মাঝে মাঝেই হাত অবশ হয়ে যাচ্ছে? স্বস্তি মিলবে এক মিনিটের ব্যায়ামে
নানা কারণে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ অবশ বোধ হয়। এর পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। নিয়ম মেনে ব্যায়াম করলে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে, এমনটাই জানাচ্ছেন ফিজিওথেরাপিস্টরা
নানা কারণে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ অবশ বোধ হয়। এর পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। নিয়ম মেনে ব্যায়াম করলে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে, এমনটাই জানাচ্ছেন ফিজিওথেরাপিস্টরা।
সম্প্রতি ফিজিওথেরাপিস্ট ম্যাডজ মারিওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনায় এসেছে।
সেখানে তিনি হাত অবশ হওয়া বা ঝিনঝিন ভাব দূর করতে একটি সহজ ব্যায়ামের পরামর্শ দিয়েছেন।

ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘দুই হাত এমনভাবে একসঙ্গে আনুন, যাতে প্রতিটি আঙুলের ডগা একে অপরকে স্পর্শ করে। তারপর দুই হাত হালকা করে একে অপরের দিকে চাপ দিন। এক মিনিট ধরে এই স্ট্রেচ চালিয়ে যান।
প্রতিদিন মাত্র এক মিনিট করে এই ব্যায়াম করলে হাতের অবশ ভাব থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
হাত অবশ হয় কেন
মায়ো ক্লিনিক জানিয়েছে, হাত অবশ হওয়ার প্রধান কারণ হলো, স্নায়ুর জ্বালা বা চাপে পড়া। অনেক সময় কবজির স্নায়ুতে চাপ পড়লে হাত নাড়াতে অসুবিধা হয়।
ডা. অনুপ খত্রি বলেন, হাত অবশ হওয়া বা ঝিনঝিন ভাব অনেক সময় অস্বস্তিকর হতে পারে এবং এর নানা কারণ থাকতে পারে।
যেমন—কার্পাল টানেল সিনড্রোম, যেখানে কবজির মিডিয়ান নার্ভ চাপের মধ্যে পড়ে, ফলে কোনো বস্তু ধরতে অসুবিধা হয়।
পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি, যা সাধারণত ডায়াবেটিস বা ভিটামিনের ঘাটতির কারণে হয়, এটিও হাত অবশ করে দিতে পারে।

এ ছাড়া গলার স্নায়ু চেপে গেলে হাত অবশ হতে পারে, যার জন্য দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন। আর একই ধরনের কাজ বারবার করলে হাত সাময়িকভাবে বা স্থায়ীভাবে অবশ হতে পারে।
এই ব্যায়াম কি সত্যিই কাজ করে?
অর্থোপেডিক সার্জন ডা. অমিত চৌধুরী বলেন, মারিওয়া প্রদর্শিত স্ট্রেচের মতো ব্যায়ামগুলো হাত অবশ ভাবের ক্ষেত্রে কিছুটা আরাম দিতে পারে, বিশেষত কার্পাল টানেল সিনড্রোমের মতো সমস্যায়।
এগুলো ব্যথা কমাতে এবং নড়াচড়ার ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, স্ট্রেচ করার সময় বা পরে ব্যথা বেড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যায়াম বন্ধ করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ডা. চৌধুরী আরো বলেন, যদি ঘন ঘন হাত অবশ হয়, তাহলে চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা করতে বলতে পারেন, যাতে মূল কারণ জানা যায়।

ডা. খত্রি যোগ করেন, স্ট্রেচ কিছুটা আরাম দিতে পারে, কিন্তু শুধু স্ট্রেচ করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। আসল কারণ নির্ধারণ করে চিকিৎসা নেওয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
কী করবেন
সঠিক অঙ্গভঙ্গি বা ভঙ্গিমা বজায় রাখুন।
বারবার একই কাজ করলে মাঝে মাঝে বিরতি নিন।
প্রয়োজনে রিস্ট স্প্লিন্ট বা ব্রেস ব্যবহার করুন।
ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতির কারণে অবশ ভাব হলে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে।
কার্পাল টানেল সিনড্রোম থাকলে ওষুধে কাজ না করলে সার্জারির দরকার হতে পারে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো— এ ধরনের ব্যায়াম বা স্ট্রেচ চিকিৎসক বা ফিজিওথেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে শুরু করা উচিত, যাতে ব্যায়াম সঠিকভাবে করা হয় এবং অতিরিক্ত টান বা আঘাত এড়ানো যায়।

আরো পড়ুন কিডনি রোগীদের জন্য যে ১০ খাবার নিষেধ
চাঁপাই প্রেস/সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস



