৩০-এর পরে গর্ভধারণে গাইনির দেওয়া ৫ গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা

আজকের দিনে অনেক নারীই ক্যারিয়ার, পড়াশোনা বা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের কারণে দেরিতে বিয়ে করছেন এবং তেমনভাবেই মা হওয়ার কথাও দেরিতে ভাবছেন। অনেকেই ৩০-এর পর সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। তবে এই বয়সে মা হওয়ার কিছু বাড়তি ঝুঁকি থাকে, যা জানা খুব জরুরি।

৩০-এর পরে গর্ভধারণে গাইনির দেওয়া ৫ গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা
সংগ্রহীত ছবি

আজকের দিনে অনেক নারীই ক্যারিয়ার, পড়াশোনা বা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের কারণে দেরিতে বিয়ে করছেন এবং তেমনভাবেই মা হওয়ার কথাও দেরিতে ভাবছেন। অনেকেই ৩০-এর পর সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। তবে এই বয়সে মা হওয়ার কিছু বাড়তি ঝুঁকি থাকে, যা জানা খুব জরুরি।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে কলকাতার গাইনিকোলজিস্ট ডা. মহুয়া ভট্টাচার্য জানান, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নারীর শরীরে কিছু পরিবর্তন আসে, যা গর্ভধারণে প্রভাব ফেলে। তাই ৩০-এর পর মা হতে চাইলে আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে সচেতন হওয়া দরকার।

বন্ধ্যত্বের ঝুঁকি বাড়ে-নারীর শরীরে ডিম্বাণু (অভ্রু) একটি নির্দিষ্ট সংখ্যায় থাকে, আর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর মান ও সংখ্যা দুটোই কমে যায়। ৩০-এর পর গর্ভধারণ করতে গেলে অনেক সময় দেখা যায় ডিম্বাণুর মান খারাপ হয়ে গেছে বা পর্যাপ্ত ডিম্বাণু নেই। এতে গর্ভধারণ কঠিন হয়, এমনকি বন্ধ্যত্বের আশঙ্কাও থাকে। তাই যারা ৩০-এর আগেই মা হতে পারেন, তাদের জন্য ঝুঁকি তুলনামূলক কম।

গর্ভপাতের (মিসকারেজ) আশঙ্কা বেশি-এই বয়সে অনেক নারী এন্ডোমেট্রিওসিস বা অ্যাডিনোমায়োসিসের মতো রোগে ভুগতে পারেন। এসব রোগের ফলে ভ্রূণ সহজে গর্ভে ধরে না, অথবা থাকলেও ভ্রূণটি ঠিকমতো বেড়ে উঠতে পারে না।

ফলে প্রাকৃতিকভাবে গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে। এজন্যই গাইনিকোলজিস্টরা বলছেন—দেরি করলে গর্ভধারণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

শিশুর বিকাশে সমস্যা হতে পারে-বয়স বেশি হলে অনেক সময় গর্ভফুলের (প্ল্যাসেন্টা) সঙ্গে জরায়ুর সঠিক সংযোগ হয় না। এতে গর্ভের শিশুর ওজন ঠিকমতো বাড়ে না, শরীর গঠনেও সমস্যা দেখা দেয়।

অনেক সময় বাইরে থেকে ওষুধ দিয়েও উন্নতি হয় না, ফলে সময়ের আগেই ডেলিভারির প্রয়োজন পড়ে। এ ছাড়া গর্ভকালীন সময়ে উচ্চ রক্তচাপ, সুগার বা পানিশূন্যতার মতো জটিলতা দেখা দিতেও পারে।

জন্মগত সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা-যে কোনো বয়সে সন্তানের জেনেটিক সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে, কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই আশঙ্কা বেড়ে যায়। বিশেষ করে ৩৫-এর পরে সন্তান নিলে ডিম্বাণুর জেনেটিক গঠন বদলে যেতে পারে, যার ফলে ডাউন সিনড্রোম বা অন্য কোনো জন্মগত সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি দেখা দেয়।

অন্যান্য শারীরিক সমস্যার প্রভাব-৩০ পেরোনোর পর অনেক নারীই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড বা কোলেস্টেরলের মতো সমস্যায় ভোগেন। এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে না রেখে গর্ভধারণ করলে জটিলতা অনেক বেড়ে যেতে পারে, এমনকি গর্ভপাতও হতে পারে।

৩০-এর পর মা হওয়া একেবারে অসম্ভব নয়। তবে তখন ঝুঁকি একটু বেশি থাকে। তাই যদি ৩০-এর পরে সন্তান নেওয়ার কথা ভাবেন, তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করান, আর শরীর-মন দুটোই সুস্থ রাখার চেষ্টা করুন।

সন্তান নেওয়া জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত—তাই সচেতন থাকাটা খুবই দরকার।

সূত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস