বাথরুমে মোবাইল ব্যবহার ডেকে আনতে পারে পাইলসের ঝুঁকি

অনেকেই বাথরুমে গিয়ে মোবাইল ফোন নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্ক্রল করেন। কিন্তু জানো কি, এই অভ্যাস তোমার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে? বিশেষ করে পাইলস বা হেমোরয়েড হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

বাথরুমে মোবাইল ব্যবহার ডেকে আনতে পারে পাইলসের ঝুঁকি
সংগ্রহীত ছবি

অনেকেই বাথরুমে গিয়ে মোবাইল ফোন নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্ক্রল করেন। কিন্তু জানো কি, এই অভ্যাস তোমার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে? বিশেষ করে পাইলস বা হেমোরয়েড হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টয়লেটে পাঁচ মিনিটের বেশি সময় ধরে মোবাইল ব্যবহার করলে মলদ্বারের রক্তনালিতে চাপ পড়ে, যা হেমোরয়েড বা পাইলসের কারণ হতে পারে। শুধু সময় নষ্ট নয়, স্বাস্থ্যও ঝুঁকিতে পড়ে।

সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষ টয়লেটে মোবাইল স্ক্রল করেন, তাদের হেমোরয়েডে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৪৬% বেশি।

১২৫ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর গবেষণায় দেখা গেছে, যারা মোবাইল নিয়ে বাথরুমে যান, তারা সাধারণত টয়লেটে ৫ মিনিট বা তার বেশি সময় কাটান এবং শারীরিকভাবে তুলনামূলক কম সক্রিয় থাকেন।

হিউস্টনের একজন চিকিৎসক মাইকেল জে. অ্যালেন জানান, টয়লেটে বেশি সময় বসে থাকলে মলদ্বারে চাপ পড়ে, ফলে রক্ত জমে যায়। এই জমে থাকা রক্তই হেমোরয়েডের মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আরেক চিকিৎসক স্নিগুয়েলে গেইগে বলেন, টয়লেটে দীর্ঘ সময় একই ভঙ্গিতে বসে থাকলে মলদ্বারের রক্তনালিতে চাপ পড়ে, যা চেয়ারে বসার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতিকর।

হেমোরয়েডের উপসর্গ

ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নাজমুল হক মাসুম জানান, হেমোরয়েড বা পাইলসের বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। আর উপসর্গগুলো ধাপে ধাপে বদলায়।

প্রথম ধাপ: মলত্যাগের সময় তাজা রক্ত পড়া, সাধারণত ব্যথা থাকে না।

দ্বিতীয় ধাপ: মলত্যাগের সময় রক্ত পড়ে ও ভেতর থেকে কিছু একটা বের হয়, যা আবার নিজে থেকেই ভেতরে ঢুকে যায়।

তৃতীয় ধাপ: মলত্যাগের সময় বাইরে কিছু বের হয়, যা হাত দিয়ে ভেতরে ঢুকাতে হয়।

চতুর্থ ধাপ: বাইরে যা বের হয়, তা আর ঢোকে না, এবং বেশ ব্যথাও হয়।

এই অভ্যাস থেকে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করা যায়?

- বাথরুমে মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়া বন্ধ করুন।

- টয়লেটে ৩–৫ মিনিটের বেশি না থাকার চেষ্টা করুন।

- প্রতিদিন বেশি আঁশযুক্ত খাবার খান (যেমন শাকসবজি)।

- প্রচুর পানি পান করুন।

- নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন।

চিকিৎসা

প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের পাইলস সাধারণত ওষুধ ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনেই সেরে যায়।

তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপে অপারেশন লাগতে পারে, তবে এখন আধুনিক লেজার বা স্টেপল পদ্ধতির কারণে অপারেশন খুব সহজ এবং কম কষ্টদায়ক।

বাথরুমে মোবাইল নেওয়া যেন আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছে। কিন্তু একটু সতর্ক হলেই ভবিষ্যতে অনেক বড় স্বাস্থ্য সমস্যা এড়ানো সম্ভব। সময় বাঁচাও, শরীরও বাঁচাও — বাথরুমে মোবাইল নয়!

সূত্র: সিএনএন