নিয়ামতপুরে জমি বন্ধক নেয়াকে কেন্দ্র করে ভ্যান চালককে মারপিট-থানায় মামলা
জমি বন্ধক নেয়াকে কেন্দ্র করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এক ভ্যান চালক ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা ও মারপিট করে গুরুতর জখম করেছে প্রতিপক্ষরা
এবিএস রতন স্টাফ রিপোর্টার নওগাঁ : নওগাঁর নিয়ামতপুরে জমি বন্ধক নেয়াকে কেন্দ্র করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বুলবুল (৩৪) নামে এক ভ্যান চালক ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা ও মারপিট করে গুরুতর জখম করেছে প্রতিপক্ষরা। উপজেলার ভাবিচা ইউনিয়নের চাপড়া গ্রামের মাঠে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তার বাবা মজির আলী মন্ডল, মা হাসিনা এবং স্ত্রী আরিফা ও মেয়ে আফসানা বনি আহত হয়। ঘটনায় বুলবুলের বাবা মজির আলী মন্ডল বাদী হয়ে একই গ্রামের প্রতিপক্ষ রাশেদুল ইসলাম (২৮) সহ আরো তিনজনকে আসামী করে নিয়ামতপুর থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়- রাশেদুল ইসলামের পরিবারের সাথে বুলবুলের পরিবার দীর্ঘদিন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন চাপড়া গ্রামের মাঠে বুলবুল ও তার বাবা জমিতের ধান বাঁধার কাজ করছিলেন। এসময় রাশেদুল, তার বাবা ও মা সহ আরো কয়েকজন কাস্তে, হাসুয়া ও লাঠি নিয়ে অতর্কিত বুলবুলের ওপর হামলা চালিয়ে মারপিট করে গুরুতর জখম। এতে বুলবুলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটাছেড়া হওয়ায় রক্তাক্ত জখম হয়। খবর পেয়ে বাড়ি থেকে তার মা, স্ত্রী ও মেয়ে তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসলে তাদেরও মারপিট করে আহত করা হয়। মারপিট দেখে এলাকাবাসীরা ছুটে আসলে তাদের আহতবস্থায় রেখে প্রতিপক্ষরা হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।
প্রতিবেশি দলি মন্ডল বলেন, যেদিন মারপিট হয় সেদিন পাশেই আমার জমিতে কাজ করছিলাম। উত্তেজিত হয়ে বুলবুলকে কাস্তে দিয়ে কুপিয়ে জখম করে রাশেদুল সহ কয়েকজন। তার পরিবারের সদস্যদের পিটিয়ে আহত ও জখম করে। পরে স্থানীয়রা বুলবুল ও তার মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।
ভুক্তভোগী ভ্যানচালক বুলবুল বলেন- গত বছর সাদেকুল ইসলামের জমি বন্ধক নিয়ে রাশেদুল চাষাবাদ করে। তার টাকার প্রয়োজন হওয়ায় ওই জমির ওপর আরো ৫০ হাজার টাকা দাবী করলে প্রতিপক্ষ রাশেদুল দিতে পারেনি। পরে আমি আড়াই লাখ টাকা দিয়ে তার জমি বন্ধক নিয়। ঘটনার দিন জমিতে ধান বাঁধার কাজ করছিলাম। তারাও পাশের জমিতে ধান কাটার কাজ করছিল। জমি বন্ধক কেন নিয়েছি এই নিয়ে সেদিন আমাকে বিভিন্ন কথা বলে এবং তর্ক শুরু করে। এক পর্যায়ে ধান কাটার কাস্তে দিয়ে আমার ওপর হামলা চালিয়ে মারপিট করে রাশেদুল ও তার বাবা সহ আরো কয়েকজন। এতে রক্তাক্ত জখম হয়। বাবা,মা, স্ত্রী ও মেয়েকেও মারপিট করে আহত করে। এখন প্রকৃত ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য আমাদের ওপর মিথ্যা মামলা দিয়ে আসামীরা হয়রানির চেষ্টা করছে।
অভিযুক্ত রাশেদুল বলেন- আমরা তাদের ওপর হামলা করিনি। তারা বিভিন্ন গুজব রটাচ্ছে। তারা মিথ্যা মামলা দেয়ায় আমাকে ১৫দিন হাজতবাস করতে হয়।
নওগাঁর নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, ভ্যানচালক বুলবুলকে মারপিটির ঘটনায় তদন্ত করে সত্যতা থাকায় মামলাটি থানায় এজাহার হিসাবে নেয়া হয়। অপরদিকে একই ঘটনায় প্রতিপক্ষ রাশেদুল আদালতে একটি মামলা করে। আদালত মামলাটি থানায় তদন্ত করে প্রতিবেদনের জন্য নির্দেশ দেন।