কণ্ঠনালিতে ক্যানসারের উপসর্গ ও চিকিৎসা
আমাদের কণ্ঠনালিতে প্রদাহ,পলিপ,টিউমার বা ক্যানসার হতে পারে ধূমপান কণ্ঠনালির ক্যানসারের অন্যতম কারণ. মদ্যপান, জর্দা বা সাদাপাতা খাওয়া,অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার,অতিরিক্ত গরম খাবার,কণ্ঠনালির অতি ব্যবহার ইত্যাদি কারণেই ক্যানসার হতে পারে

আমাদের কণ্ঠনালিতে প্রদাহ,পলিপ,টিউমার বা ক্যানসার হতে পারে। ধূমপান কণ্ঠনালির ক্যানসারের অন্যতম কারণ। মদ্যপান, জর্দা বা সাদাপাতা খাওয়া,অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার,অতিরিক্ত গরম খাবার,কণ্ঠনালির অতি ব্যবহার ইত্যাদি কারণেই ক্যানসার হতে পারে।
লক্ষণ ও রোগনির্ণয়-কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন, যা চিকিৎসায় ভালো হচ্ছে না অথবা ১৫ দিনের বেশি স্থায়ী হয়। শ্বাসকষ্ট হতে পারে। গলায় কিছু আটকে থাকার অনুভূতি হয়। ঢোক গিলতে অসুবিধা,গলা ফুলে যাওয়া—এমনকি কখনো কখনো কানেও ব্যথা হতে পারে।
এসব উপসর্গ দেখা দিলে রোগীর সম্পূর্ণ ইতিহাস জেনে গলা পরীক্ষা করে দেখা হয়। এই ক্যানসারের বিশেষ বৈশিষ্ট্য, প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা গেলে প্রায় সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব। কিন্তু রোগ যদি ‘অ্যাডভান্স’ পর্যায়ে চলে যায়, তখন চিকিৎসায় খুব বেশি একটা সুফল পাওয়া যায় না।
যদি কারও দুই সপ্তাহের বেশি গলার স্বর পরিবর্তন বা ভাঙা থাকে, তবে অবশ্যই একজন নাক কান গলা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। বর্তমানে আমাদের দেশে আধুনিক পদ্ধতি, যেমন ফাইবার অপটিক ভিডিও ল্যারেংগসকপির মাধ্যমে সহজেই এ রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। এর মাধ্যমে রোগী নিজেও টিভির পর্দায় নিজের কণ্ঠনালি দেখতে পারবেন।
কণ্ঠনালির ক্যানসার হয়েছে সন্দেহ হলে গলা থেকে বায়োপসি নিয়ে হিস্টোপ্যাথলজির মাধ্যমে ক্যানসার শনাক্ত করা হয়। যদি রোগী শেষ পর্যায়ে শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসেন, তখন জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শ্বাস নেওয়ার জন্য গলায় একটি টিউব বসানো হয়। একে বলে ট্রাকিওশটমি।
চিকিৎসা:ক্যানসার শনাক্ত হলে অবিলম্বে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি ও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কণ্ঠনালির ক্যানসারের চিকিৎসা করা যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগনির্ণয় করা সম্ভব হলে রেডিওথেরাপির মাধ্যমে রোগী সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এলে অস্ত্রোপচার করা ছাড়া উপায় থাকে না।
স্বরযন্ত্রের বা কণ্ঠনালির অস্ত্রোপচার করলে মানুষ কথা বলতে পারে না। তখন কথা বলার জন্য আলাদা ব্যবস্থা নিতে হয়। যেমন কৃত্রিম স্বরযন্ত্রের সংযোজন অথবা খাদ্যনালির মাধ্যমে কথা বলার বিশেষ প্রশিক্ষণ।
কণ্ঠনালির ক্যানসার প্রতিরোধে ধূমপান পরিহার করুন। অন্য যেসব কারণে কণ্ঠনালির ক্যানসার হয়, তা এড়িয়ে চলুন। দীর্ঘদিন স্বর ভাঙা বা কণ্ঠ পরিবর্তনকে অবহেলা করবেন না। উপসর্গ দেখা দিলে বিলম্ব না করে দ্রুত একজন নাক কান গলা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিন। সূত্র প্রথম আলো
অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী, নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা