আসছে শীত-রস আহরনের জন্য খেজুর গাছ প্রস্তুতিতে ব্যস্ত বুড়িচংয়ে গাছিরা

শীত আসতে না আসতেই হেমন্তের শুরুতে রস আহরনের জন্য খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার গাছিরা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাছিরা খেজুর গাছ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও চাঁছাছোলা করে যাচ্ছে

আসছে শীত-রস আহরনের জন্য খেজুর গাছ প্রস্তুতিতে ব্যস্ত বুড়িচংয়ে গাছিরা

মোঃ আবদুল্লাহ বুড়িচং কুমিল্লা:শীত আসতে না আসতেই হেমন্তের শুরুতে রস আহরনের জন্য খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার গাছিরা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাছিরা খেজুর গাছ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও চাঁছাছোলা করে যাচ্ছে। এই উপজেলায় ফসলের মাঠে,সড়কের পাশে ও বসত বাড়ির আঙ্গিনায় আছে অসংখ্য খেজুর গাছ। শীত আসার আগেই খেজুর গাছ গুলো প্রস্তুত করে রাখে গাছিরা।শীত পড়ার সাথে সাথে গাছ গুলো থেকে রস সংগ্রহ করে তারা।

বুড়িচং উপজেলার অনেক কৃষকই এই পেশার সাথে জড়িত। ইতোমধ্যে গাছিরা হাতে দা আর কোমরে দড়ি বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ চাঁছাছোলা ও নলি বসানোর কাজ করছেন। ঝুঁকি নিয়েই কোমরে রশি বেঁধে খেজুরের গাছ প্রস্তুত করছেন তারা।

শীতের দিন মানেই খেজুর রস ও নলেন গুড়ের মৌ মৌ গন্ধ। শীতের সকালে খেজুরের তাজা রস যে কতটা তৃপ্তিকর তা বলে বোঝানো যায় না। আর খেজুর রসের পিঠা এবং পায়েস তো খুবই মজাদার। এ কারণে শীত মৌসুমের শুরুতেই গ্রামাঞ্চলে খেজুর রসের পায়েস ও পিঠে খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। 

প্রতিদিনই কোনো না কোনো বাড়িতে খেজুর রসের তৈরি খাদ্যের আয়োজন চলে। শীতের সকালে বাড়ির উঠানে বসে সূর্যের তাপ নিতে নিতে খেজুরের মিষ্টি রস যে পান করেছে, তার স্বাদ কোনো দিন সে ভুলতে পারবে না। শুধু খেজুরের রসই নয় এর থেকে তৈরি হয় সুস্বাদু পাটালি, গুড় ও প্রাকৃতিক ভিনেগার। খেজুর গুড় বাঙালির সংস্কৃতিক একটা অঙ্গ।

পীরযাত্রাপুর ইউনিয়ন শ্যামপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন, ৩ দিন হয়েছে কাজ শুরু করেছি। গাছের ময়লা ও অপ্রয়োজনীয় ডালপালা ছেঁটে ফেলা হয়েছে। এর পর আরেকবার চাঁছাছোলা হবে।তার সপ্তাহ খানিক পরে থেকে নলি স্থাপনের কাজ শুরু হবে। কিছুদিন পরই গাছে লাগানো হবে মাটির পাতিল। এর পরই শুরু হবে সুস্বাদু খেজুর রস সংগ্রহের কাজ।

ষোলনল ইউনিয়নের ভান্তি গ্রামের গাছি বিল্লাল হোসেন জানান, শীতের সঙ্গে জড়িয়ে আছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস। আর সপ্তাহ দুইয়েক পর গাছ থেকে রস সংগ্রহের পর্ব শুরু হবে। 

নাঈম নামের এক গাছি জানান, বর্তমানে যে হারে খেজুর গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে তাতে এক সময় হয়তো আমাদের দেশে খেজুর গাছ থাকবে না। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাইলে আমাদের সবার উচিত তালগাছের মতো বেশি বেশি খেজুর গাছ লাগানো এবং তা যত্ন সহকারে বড় করা।