নওগাঁয় নিয়মিত খাজনা খারিজ ও দখলে থাকা জমির মালিকানা বাতিল চেষ্টার অভিযোগ
দীর্ঘদিন ধরে নওগাঁয় নিয়মিত খাজনা প্রদান, খারিজ ও দখলে থাকা জমির মালিকানা বাতিল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে

এ.বি.এস রতন স্টাফ রিপোর্টার নওগাঁ : দীর্ঘদিন ধরে নওগাঁয় নিয়মিত খাজনা প্রদান, খারিজ ও দখলে থাকা জমির মালিকানা বাতিল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে নওগাঁ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) খান সালমান হাবীব শুনানি শেষে জমির মালিকানা বাতিলের সীদ্ধান্ত নেন। এরপর তিনি দখলে থাকা জমির মালিককে আপিলের পরামর্শ দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৯ সালে নওগাঁ সদর উপজেলার বোয়ালিয়া মৌজায় মরহুম আব্দুল বারী নামে এক ব্যক্তি রেজিস্ট্রি দলিলমূলে বোয়ালিয়া মৌজা, খতিয়ান নাম্বার ৪০১ ও ২৯১৬ দাগে ১৪ শতক এবং ২৯০৪ দাগে ১২ শতাংশ জমি কবলা করেন। এরপর থেকে ওই জমিটির খারিজ ও নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে ভোগদখল করে আসছিলেন। বর্তমানে জমিটির ফসল রক্ষায় চারিদিকে ইটের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। হঠাৎ জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি বোয়ালিয়া গ্রামের তৌহিদুর রহমান প্রিন্স নামে এক ব্যক্তি ১৯৭৪ সালের একটি দলিলের ভিত্তিতে ওই জমির মালিকানা দাবি করেন। ইতোমধ্যে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে নওগাঁ সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে দু’পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি হয়।
মরহুম আব্দুল বারীর পক্ষে মো: মুমিনুল বলেন, আইনানুগভাবে জমিটি কেনা হয়েছে। খারিজও করা হয় এবং নিয়মিত খাজনা দেওয়া হচ্ছে। হঠাৎ ৫০ বছর আগের একটি দলিল দেখিয়ে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি নিজেকে সেই জমির মালিক দাবী করে বসেন। সহকারী কমিশনার ভূমি মনগড়াভাবে ওই জমির মালিকানা বাতিলের সীদ্ধন্ত নেন। শুনানির দিনে বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করলে তিনি অশোভন আচরন করে এবং তার অফিস থেকে আমাদের ঘার ধরে বের করে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন।
জমির মালিকানা দাবি করা ব্যক্তি তৌহিদুর রহমান প্রিন্স জানান, জমির মালিকদের কাছ থেকে দুইজন ব্যক্তি ১৯৭৭ সালে এবং অপরজন মরহুম আব্দুল বারী ২০০৯ সালে জমি কবলা করেন। ১৯৭৭ সালে যিনি জমি কবলা করেছেন তার কাগজপত্র সম্পূর্ন রয়েছে। আবার পরবর্তীতে আব্দুল বারী জমি কবলা করে ২০০৯ সালের দলিলমুলে খারিজ ও খাজনা দিয়েছে। সেইসাথে ওই জায়গাটি প্রাচীর দিয়ে তারা দখলে রেখেছে। আমার সবকাগজপত্র সহকারী কমিশনার (ভূমি)জমা দিয়েছি এবং ওদের খারিজ বাতিল করার দাবী জানিয়েছে।বিষয়টি নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান।
নওগাঁ জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শ্যামল কুমার সরকার জানান, আব্দুল বারীর নামে কবলাকৃত সম্পত্তির খাজনা, খারিজ ও দখল সবই রয়েছে। এক যুগেরও অধিক সময় দখলে থাকা জমিটির মালিকানা উচ্ছেদের মামলা ছাড়া হঠাৎ করে বাতিলের সীদ্ধান্ত ঠিক হবে না।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে নওগাঁ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) খান সালমান হাবীব বলেন, দু'পক্ষের উপস্থিতিতে কাগজ ঘেঁটে শুনানিতে জমির মালিকানা বাতিল করার সীদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সাথে মরহুম আব্দুল বারীর পক্ষের লোকজনদের আপিলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।