সেবাগ্রহীতাদের ঘরে আটকে রেখে মারধর নাচোলে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

ইউপি চেয়ারম্যানের বিচারের দাবিতে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা

সেবাগ্রহীতাদের ঘরে আটকে রেখে মারধর নাচোলে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

নাচোল প্রতিনিধিঃ ৭০ বছর বয়সী আব্দুস সাত্তার একটি জমি সংক্রান্ত বিরোধের সুরাহা পেতে ছুটে যান ইউনিয়ন পরিষদে। বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পরামর্শ চান ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামের কাছে। ক্ষিপ্ত হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান চড়াও হন বৃদ্ধ আব্দুস সাত্তারের উপর। থাপ্পড়, কিল-ঘুষি দেন বৃদ্ধ আব্দুস সাত্তারকে। গ্রাম পুলিশ সদস্যদেরকে নির্দেশ দেন ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে আটকে রাখার। এরপর অন্তত ৩ ঘন্টা ঘরে আটকে রাখা হয় ওই বৃদ্ধকে। পরে বাড়ি ফিরে অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করার কথা জানান ঘনিষ্ঠজনদের।

গত ৩০ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়ন পরিষদে ঘটে এ ঘটনা। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের বিচারের দাবিতে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা। মানববন্ধনে তাদের দাবি, শুধু আব্দুস সাত্তারকেই নয়, বিভিন্ন সময়ে সেবাগ্রহীতাদেরকে আটকে রেখে নির্যাতন করেন চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম।

মানববন্ধনে ভুক্তভোগী বৃদ্ধ আব্দুস সাত্তার বলেন, আমি গিয়ে অভিযোগ দেয়ার পরই মারধর শুরু করে। এরপর ঘরের মধ্যে আটকে রাখে আমাকে নির্যাতন করা হয়। আমার কোন অপরাধ না থাকা স্বত্ত্বেও কোনরকম যাচাই-বাছাই না করেই বিপক্ষ লোকের কথা শুনে আমাকে এভাবে অপমান ও মারধর করা হয়। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও চেয়ারম্যানের বিচার দাবি করছি। 

আব্দুস সাত্তারের ছেলে আমার শহিদুল ইসলাম জানান, বাবা বাড়িতে এসেও কিছু বলতে চায়নি। পরে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আত্মহত্যা করবে বলে জানায়। অনেক বুঝিয়ে শান্ত করলেও হঠাৎ করেই মধ্যরাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়। বাবা এমন ঘটনায় চরম অপমান হয়েছেন ও কষ্ট পেয়েছেন। 

অভিযোগ রয়েছে, গত ৩-৪ মাস আগেও ষাটোর্ধ আব্দুল লতিবকে একইভাবে আটকে রাখেন চেয়ারম্যান। এসব ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে বিচারের দাবি ভুক্তভোগীদের। এনিয়ে আব্দুল লতিব বলেন, কোন কথা শুনে হঠাৎ করেই আমাকে ঘরে বন্দি করার নির্দেশ দেন। দীর্ঘ সময় আটকে রাখার পর জরিমানা আদায় করে ছাড়া হয়। 

ঘরে আটকে রেখে মারধরের কথা স্বীকার করেন নেজামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম। তবে জনপ্রতিনিধি হয়েও সেবাগ্রহীতাকে মারধরের বিষয়ে নিজের অপরাধের কথা অস্বীকার করেন তিনি। চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, বারবার বলার পরেও অন্যায় কাজ করায় তার গায়ে হাত দিয়েছি ও জরিমানার টাকা আদায় করার জন্য ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল।