গরু আনতে গিয়ে স্রোতের পানিতে ডুবে দুইবোনের মৃত্যু

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে গরু আনতে গিয়ে নদীর স্রোতের পানিতে ডুবে মারিয়া (১১) ও সামিয়া(০৮) দুই সহোদর বোনের মৃত্যু হয়েছে।

গরু আনতে গিয়ে স্রোতের পানিতে ডুবে দুইবোনের মৃত্যু

সুজিত কুমার চক্রবর্তী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধিঃব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে গরু আনতে গিয়ে নদীর স্রোতের পানিতে ডুবে মারিয়া (১১) ও সামিয়া(০৮) দুই সহোদর বোনের মৃত্যু হয়েছে। 

শুক্রবার ৩০ মে বিকেলে উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের গোকর্ণ মধ্যপাড়ার মিনার আলীর দুই মেয়ে আকাশিয়া মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে নদীর প্রবল স্রোতের পানিতে ডুবে যায়। রাতভর খোঁজাখুঁজির পর আজ শনিবার ৩১ মে সকালে তিতাস নদীর বেরিবাঁধ সংলগ্ন স্থান থেকে ভাসমান অবস্থায় দুই সহোদর বোনের মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়। প্রবাসী থাকা বাবা মিনার আলীমেয়েদের এই মর্মান্তিক মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে দিশেহারা হয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,“ওরা আমার আদরের সন্তান, কে জানতো এমনভাবে ফিরে আসবে! আমার সব শেষ হয়ে গেলো।”

নিহতদের চাচা জালাল আহমেদ বলেন, বৈরী আবহাওয়া আমরা সারারাত নৌকা নিয়ে তাদের অনেক খোজাঁখুজি করে ও পাই নাই। আজ শনিবার সকালে একজনের লাশ নদীতে ভেসে উঠেছে এবং অন্যজনের লাশ মাছের জালে উঠেছে । আমাদের সব কিছু শেষ ভাই।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গোকর্ণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ শাহীন বলেন, এই ঘটনা খুবই মর্মান্তিক। আমরা এলাকাবাসীকে অনুরোধ করছি বর্ষার সময়ে নদী বা খালের ধারে গেলে সব সময় সতর্ক থাকার জন্য। নিহত পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।

নাসিরনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ খায়রুল আলম জানান, সংবাদ পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশগুলো তদন্ত সাপেক্ষে দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনা নাছরিন জানান, খবর পেয়ে আমি এসিল্যান্ড ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। রাতে খুঁজাখুঁজির পর তাদের সন্ধান না পাওয়ায়, মেয়ে দুটোর মায়ের সাথে কথা বলে জানতে পারি গরু আনতে নদীর তীরে গিয়েছিল। সন্ধ্যার সময় গরুগুলো বাড়িতে চলে আসলেও মেয়েরা বাড়িতে ফিরেনি। অনেক খোঁজাখুঁজি পরে মাইকিং করে পুরো এলাকায় নিখোঁজের সংবাদ জানানো হয়। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত গভীর হলেও কোন খোঁজখবর না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভৈরবে ডুবুরিদের খবর দেয়। ডুবুরিরা আসার আগেই সকালে লাশ দুটো নদী পাওয়া যায় । তিনি আরো জানান, নিহতদের বাবা মিনার আলী কিছুদিন হলো বিদেশে গেছে। তার চার সন্তানের মধ্যে ওরা দু''জন বড়। আসলে এমন মর্মান্তিক ঘটনায় সান্ত্বনা দেওয়ার কোন ভাষা নেই। এই ক্ষতি কোনভাবেই পূরণ করার মতো নয়।