নওগাঁয় ক্যান্সারে আক্রান্ত খলিলের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়ালেন ছাত্রনেতা জুনাইদ

নওগাঁর মানুষের পাশে দাঁড়ানো, কষ্টের সময় হাত বাড়িয়ে দেওয়া—এই মানবিক চেতনায় আবারও আলো ছড়ালেন নওগাঁ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুনাইদ হোসেন জুন।

নওগাঁয় ক্যান্সারে আক্রান্ত খলিলের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়ালেন ছাত্রনেতা জুনাইদ

এ.বি.এস রতন স্টাফ রিপোর্টার : নওগাঁর মানুষের পাশে দাঁড়ানো, কষ্টের সময় হাত বাড়িয়ে দেওয়া—এই মানবিক চেতনায় আবারও আলো ছড়ালেন নওগাঁ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুনাইদ হোসেন জুন।

জানা গেছে, নওগাঁ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের খাগড়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ খলিল উদ্দিন (৪২) দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার পরিবার একদিকে যেমন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, তেমনি আর্থিক দিক থেকেও বিপাকে পড়েছে। খলিলের বাবা মুকুল হোসেন দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন—ছেলের চিকিৎসার ব্যয় মেটানো তাদের পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছিল না।

এই সংকটময় সময়ে খলিলের নিকটাত্মীয়রা যোগাযোগ করেন নওগাঁ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক জুনাইদ হোসেন জুনের সঙ্গে। ছাত্রদলের এই তরুণ নেতা দীর্ঘদিন ধরে মানবিক কাজের সঙ্গে জড়িত, আর এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না।

খবর পাওয়ার পরপরই জুন নিজে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্বে কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এগিয়ে আসেন খলিলের পাশে। নিজে গিয়েছেন কলেজের প্রতিটি বিভাগে, শ্রেণিকক্ষে। শিক্ষার্থীদের সামনে দাঁড়িয়ে জানিয়েছেন খলিলের গল্প, তার অসহায় বাস্তবতা। চেয়েছেন সহযোগীতা। এগিয়ে এসেছেন সবাই।

অনেকেই বলেছেন—জুন ভাইয়ের মতো নেতা থাকলে সমাজ বদলাবে। জানতে চাইলে জুনাইদ বলেন, "আমি মনে করি, একজন ছাত্রনেতা হওয়ার মূল কাজ শুধু মিছিল-স্লোগান নয়, বরং মানুষের দুঃখ-কষ্টে পাশে দাঁড়ানো। খলিল ভাইয়ের মতো একজন অসহায় রোগীর পাশে না দাঁড়াতে পারলে আমার অবস্থান ছাত্ররাজনীতিতে অর্থহীন হতো।

এই ছাত্র নেতা আরো বলেন, "আমি কোনো বাহবা চাই না। আমি চাই, আমাদের এই প্রজন্মটা জানুক—মানবতা হারিয়ে যায়নি। আমরা সবাই মিলে একেকটা মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারি। একজন রোগীর পাশে দাঁড়ানো মানে কেবল টাকা দেওয়া নয়, বরং তাকে বলাটা—‘তুমি একা নও’।

এই পুরো কার্যক্রমে ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। এক বিশাল অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে উঠে আসে প্রয়োজনীয় সহায়তা, যা তুলে দেওয়া হয় খলিল উদ্দিনের চিকিৎসা খরচের জন্য। আমরা আরো চেষ্টা করছি যতদিন পারি তার জন্য সহযোগীতা করবো।

জুনাইদ বললেন, "রাজনীতি মানেই দায়িত্ব, আর নেতৃত্ব মানেই সবার আগে এগিয়ে যাওয়া। আমি চাই ছাত্রনেতারা এমন উদ্যোগে প্রতিযোগিতা করুক—কে কার চেয়ে বেশি অসহায়ের পাশে দাঁড়াতে পারে, সেই হোক আমাদের প্রতিযোগিতা।

এদিকে জুনসহ ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের এই উদ্যোগে কলেজ চত্বরে তৈরি হয় এক অনন্য উদ্দীপনা। কেউ দশ টাকা, কেউ বিশ—সবাই মিলে একটাই লক্ষ্য, একজন অসুস্থ মানুষকে একটু স্বস্তি দেওয়া।

খলিলের পরিবার জানায়, “আমরা ভেবেছিলাম, এই সমাজে বুঝি কেউ পাশে থাকবে না। কিন্তু জুন ভাই ও তার ছাত্রদল যেভাবে এগিয়ে এসেছেন, তা আমাদের জন্য অকল্পনীয়। আমরা চিরকৃতজ্ঞ।

কলেজ শিক্ষার্থী মোতাইল হোসেন বলেন,নেতৃত্ব কেবল স্লোগান বা মিছিল নয়, সত্যিকারের নেতৃত্ব ফুটে ওঠে অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে—আর সেটাই করে দেখিয়েছেন জুনাইদ হোসেন জুন ভাই।