নারী শিক্ষার্থীদের মর্যাদা রক্ষায় ছাত্রদলের পদক্ষেপে পবিপ্রবিতে পর্দা কর্নার উদ্বোধন
ধর্মীয় মূল্যবোধ, সামাজিক শালীনতা ও নারীর মর্যাদা রক্ষার অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পবিপ্রবি

মোঃ সজিব সরদার পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি: ধর্মীয় মূল্যবোধ, সামাজিক শালীনতা ও নারীর মর্যাদা রক্ষার অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি)।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় সোমবার (১৩ অক্টোবর) উদ্বোধন করা হয়েছে ‘পর্দা কর্নার’—পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও পর্দানশীল নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে সংরক্ষিত এই কর্নার।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিন, লাইব্রেরিয়ান অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুজাহাঙ্গীর কবির সরকার, প্রক্টর অধ্যাপক আবুল বাশার খান, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. জামাল হোসেন,পরিচালক(শরীর চর্চা) ড.মোঃ আমিনুল ইসলাম,ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আবুবক্কর সিদ্দিক এবং সহকারী প্রক্টর ড. মুহাম্মদ ইকবাল হোসেনসহ শিক্ষক,কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থী আফিয়া আক্তার জানান, “আগে ছেলেদের ভিড়ে ক্যাফেটেরিয়ায় খেতে অস্বস্তি হতো। এখন আমরা স্বস্তিতে, নিরাপদ পরিবেশে খাবার খেতে পারব, একইসঙ্গে ধর্মীয় মূল্যবোধও রক্ষা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম রাতুল ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা জনি জানান, “নারী শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা বিবেচনা করেই আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন,“শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশ গড়ে তোলা প্রশাসনের অন্যতম লক্ষ্য। এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে সেই লক্ষ্য পূরণের দিকেই এগিয়ে নেবে বিশ্ববিদ্যালয়কে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান বলেন,“আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় তখনই সত্যিকার অর্থে উন্নত হয়, যখন সেখানে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সমান মর্যাদা পায়। ‘পর্দা কর্নার’ সেই সহমর্মিতার প্রতীক।
উদ্যোগটির প্রশংসা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন,“আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কেবল জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র নয়-এটি নৈতিকতা, মানবিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধেরও অঙ্গন। ইসলামে নারীর মর্যাদা সর্বোচ্চ। নারীকে সম্মান জানানো মানেই মানবতাকে সম্মান জানানো। ‘পর্দা কর্নার’ সেই সম্মান ও শালীনতার বাস্তব প্রতিফলন।
তিনি আরও বলেন, “ছাত্রদলের এ মানবিক উদ্যোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে আরও উজ্জ্বল করবে। এটি ধর্মীয় চেতনা ও আধুনিক শিক্ষার এক সুন্দর সেতুবন্ধন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দুই দশক পর এই প্রথম এমন মানবিক ও নৈতিক উদ্যোগে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ব্যাপক প্রশংসার ঢেউ। অনেকেই বলছেন—এটি কেবল একটি ‘কর্নার’ নয়, বরং এটি নৈতিকতা, শালীনতা ও বিশ্বাসের সমন্বয়ে নতুন সামাজিক সংস্কৃতির সূচনা।
ইসলামী শালীনতা, নারীর মর্যাদা ও আধুনিক শিক্ষার সুন্দর সংমিশ্রণে পবিপ্রবির এই উদ্যোগ যেন দেশের অন্যান্য শিক্ষাঙ্গনের জন্যও হয়ে ওঠে অনুপ্রেরণার বাতিঘর—এমনটাই প্রত্যাশা সবার।