পরিক্ষায় নকল ধরা পড়া ছাত্রদল নেতাকে জুলাই/আগস্টের দোহায় দিয়ে মওকুফ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর বেরোবি তে নকল করে ধরা পড়া রংপুর মহানগর শাখার সিনিয়র যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো: রিফাত হোসেন রাফি

পরিক্ষায় নকল ধরা পড়া ছাত্রদল নেতাকে জুলাই/আগস্টের দোহায় দিয়ে মওকুফ

তজিবুর রহমান রংপুর প্রতিনিধিঃবেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর ( বেরোবি) তে নকল করে ধরা পড়া রংপুর মহানগর শাখার সিনিয়র যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো: রিফাত হোসেন (রাফি) কে জুলায়/আগস্ট অভ্যুত্থানের দোহায় দিয়ে বিশেষ বিবেচনায় মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা যায়, গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে পরিক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করার কারণে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০২২-২০২৩ সেশনের ২০২৩ সালের ১ম বর্ষ ১ম সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা (মানোন্নয়ন) PHY 1101 (Engg. Physics) বিষয়ের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থী মো: রিফাত হোসেন রিফা, আইডি: ১২০১৬০৫৩; রেজি, নম্বর: ০০০০১৪৮৬৮, সেশন ২০২০-২০২১ (পুনঃভর্তি ২০২১-২০২২) বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর মোবাইলের ধারনকৃত ইমেজ থেকে মূল উত্তরপত্রে লেখার সময় কক্ষ পরিদর্শক এর নিকট ধরা পড়েন। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট প্রধান পরিদর্শক শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরে প্রেরণ করেন। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তর থেকে উল্লিখিত শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করা হলে শিক্ষার্থী তার জবাব প্রদান করেন।  

১৩ জানুয়ারি ২০২৫ পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো তানজিউল ইসলাম সাক্ষরিত এক স্মারকে বলা হয়, আপনি ১ম বর্ষ ১ম সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা (মানোন্নয়ন)-২০২৩ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর বিদ্যমান শৃঙ্খলা বিষয়ক বিধি ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আপনাকে 'পরীক্ষায় অসদুপায় ও শান্তিমূলক ব্যবস্থা বিধিমালা-২০১৮' এর ৪ ব্যাখ্যা (খ) উপবিধি অনুযায়ী মানোন্নয়ন পরীক্ষা ও অধ্যয়নরত সেমিস্টারের কন্টিনিউয়াস এসেসমেন্টসহ সেমিস্টার ফাইনালের সকল কোর্সের পরীক্ষা বাতিল এবং পরবর্তী ব্যাচের (Next available batch) সঙ্গে বাতিলকৃত সেমিস্টারের পরীক্ষা দিতে পারবেন মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। পরবর্তীতে আপনি শাস্তি মওকুফের আবেদন করায় জুলাই/আগস্ট এর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ বিবেচনায় আপনার শান্তি মওকুফের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উল্লেখ্য, এ সুযোগ শুধুমাত্র একবারের জন্য বিবেচিত হবে।

বেরোবি প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তকে ঘৃণা প্রকাশ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।ছাত্রদলের নেতাকে বিশেষ বিবেচনায় মাফ করা বিষয়ে ভালোভাবে নিচ্ছে না শিক্ষার্থীরা।নকল করে ধরা খাওয়া নেতা এখন জুলাইয়ের দোহাই দিয়ে পার পাচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন।

এ বিষয়ে ছাত্রদল নেতা রিফাত হোসেন রাফি বলেন, পরীক্ষা চলাকালীন সময় আমার কাছে মোবাইল পাওয়ায় তৎকালীন সময় আওয়ামী লীগের দোসরা আমাকে বহিষ্কার করেছে। আমি ছাত্রদল করায় আমার উপরে আরো বেশি চওড়া হয়েছে। সেজন্য আমি শৃঙ্খলা বোর্ডে আবেদন করি। আমার সাথে অন্যায় হয়েছে সেটি আমি উল্লেখ করি। জুলাই আগস্ট বিবেচনায় শাস্তি মওকুফ এর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, আমি আহত শিক্ষার্থী হিসেবে আবেদন করেছি। সে হিসেবে তারা বিবেচনা করেছে। 

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. মো.ফেরদৌস রহমান বলেন, বিষয়টি এখনো ফাইনাল নয়। শৃঙ্খলা বোর্ড শাস্তি মওকুফের সিদ্ধান্ত নিলেও এইটি একাডেমিক কাউন্সিল এবং সিন্ডিকেট অনুমোদন পেলে তারপর সে পরীক্ষায় বসতে পারবে। এক বছর পূর্বে বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থী কিভাবে জুলাই আগস্ট বিবেচনায় শৃঙ্খলা বোর্ড শাস্তি মওকুফের সিদ্ধান্ত নেয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, সে জুলাই বিপ্লবের আহত শিক্ষার্থী সে হিসেবে এটি বিবেচনা করা হয়েছে। 

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড.মো.তানজিউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয়। এখনো একাডেমি কাউন্সিল এবং সিন্ডিকেটের অনুমোদন বাকি আছে। আর চিঠিতে ভাষাগত কিছু ভুল রয়েছে রবিবার সেটি ঠিক করে পুনরায় দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.মো:শওকাত আলী বলেন,বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয়।সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত হবে তারপর বিষয় টি জানানো হবে।