নওগাঁর মান্দায় ৮’শ একর খাস জমি রক্ষায় ইউএনওর অনন্য উদ্যোগ

নওগাঁর মান্দা উপজেলার উথরাইল বিলে খাস জমি উদ্ধার ও বেহাত হওয়া ব্যক্তি মালিকানা জমি প্রকৃত মালিককে বুঝিয়েদিতে কাজ শুরু করেছে মান্দা উপজেলা প্রশাসন।

নওগাঁর মান্দায় ৮’শ একর খাস জমি রক্ষায় ইউএনওর অনন্য উদ্যোগ

এবিএস রতন স্টাফ রিপোর্টার নওগাঁ: নওগাঁর মান্দা উপজেলার উথরাইল বিলে খাস জমি উদ্ধার ও বেহাত হওয়া ব্যক্তি মালিকানা জমি প্রকৃত মালিককে বুঝিয়েদিতে কাজ শুরু করেছে মান্দা উপজেলা প্রশাসন। 

মঙ্গলবার ( ২১ জানুয়ারি) এ উপলক্ষে দুই দিন ব্যাপী বিল এলাকায় অস্থায়ীক্যাম্পে গণশুনানির আয়োজন করেন মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ আলম মিয়া। গণশুনানির প্রথম দিনে অংশ নেয় ভাঁরশো ইউনিয়নের ৪টি মৌজার অন্তত আড়াই'জন কৃষক।   

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ আলম মিয়া জানান, কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন মাধ্যমে স্থানীয় ব্যক্তিদের গনশুনানির বিষয়টি জানানো হয়েছে। সে অনুযায়ী জমির প্রকৃত কাগজপত্র আছে এমন ব্যক্তি নিবন্ধনে অংশ নেন। এরপর নিবন্ধনকৃতব্যক্তিরা তাদের দাবীকৃত জমির পক্ষে বিপক্ষে তথ্যপ্রমান উপস্থাপন করেন। যাদের প্রমানাদি সঠিকপ্রতিয়মান হচ্ছে তাদেরকে তাদের জমি বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তির জমি কেউ জবরদখলকরে থাকলে তাকে তা ছেড়ে দিতে নোটিশ দেয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়; যুগের পর যুগ ধরে সরকারের‘ক’ তপশিল ভুক্ত খাস সম্পত্তি দখলকরে খাচ্ছেন অনেকেই। সেগুলো উদ্ধার করে দখলমুক্ত করা হচ্ছে।   

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরও জানান, এত বিপুল পরিমান জমির বিরোধ অফিসে বসে মিটানো সম্ভব নয়। আবার এসব কাজে বার বার অফিসে যেতে মানুষজনও হয়রানীর শিকার হতে পারে। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় প্রশাসনের সেবা পৌঁছে দিতে এমন উদ্যোগ। 

নিজের জমি বুঝিয়ে পেয়ে মান্দা উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের কৃষক নাহিন প্রমানিক জানান, দুটি আলাদা খতিয়ানে তাদের প্রায় ১৪ বিঘা জমি ১২ বছর যাবত অন্যের দখলে আছে। তার বাবা বেঁচে থাকাকালিন জমিগুলো তারাই ভোগ করতেন। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর স্থানীয় কয়েকজন জমিগুলো অবৈধভাবে দখল করে ফেলে। পড়ালেখার জন্য বাহিরে থাকায় জমিগুলো আর উদ্ধার করা যায়নি। হঠাৎই ইউএনওর এমন উদ্যোগে সাড়া দিয়ে জমি ফেরত নিতে এসেছেন তিনি। এরইমধ্যে শুনানিও হয়েছে। যেখানে সেই জমিগুলো তাদের বলে রায় এসেছে। এখনদ খলদারদের নোটিশ পাঠালেই দখলমুক্ত হবে জমিগুলো।   

স্থানীয়কৃষক আব্দুল জলিল জানান, বিল এলাকার এসব জমি নিয়ে প্রতি বছরই মারামারি হতো। মামলাও আছে অনেক। প্রশাসনের এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে একদিকে যেমন জমির প্রকৃত মালিকরা স্বস্তিপাবেন। অন্যদিকে সরকারের খাস সম্পত্তিগুলোও সরকারের ঘরে ফিরে আসবে। 

এবিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, শুধুমাত্র মান্দা নয়, জেলাজুড়ে হাজার হাজার বিঘা খাস জমি এবং পুকুর মানুষ ভোগদখল করছে। এগুলো উদ্ধার করায় তাদের মুল কাজ। এরইমধ্যে অনেক জমি ও পুকুর উদ্ধার হয়েছে। কিছু জমির বিপরিতে মামলাও হয়েছে। সেগুলোর পক্ষে আদালতে যথাযথ তথ্যপ্রমান উপস্থাপন করে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। গণশুনানির এমন কাজ অব্যাহত থাকবে।  

গণশুনানীকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি শারমিন জাহান লুনা, মান্দা থানার পরিদর্শক তদন্ত আব্দুলগণি, সেনাবাহিনীর সদস্য ও স্থানীয় কয়েক গ্রামের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।