চাঁপাইনবাবগঞ্জে একসাথে দুই শিশু ধর্ষণচেষ্টা
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গায় একসাথে আট বছর বয়সী দুই শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা ও শ্লীলতাহানি অভিযোগ উঠেছে ৫৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গায় একসাথে আট বছর বয়সী দুই শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা ও শ্লীলতাহানি অভিযোগ উঠেছে ৫৫ বছর বয়সী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শুধুমাত্র ভুল স্বীকার করিয়ে এ ঘটনার শালিস করেছেন সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জহরুল ইসলাম। বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের চকঝগড়ু গ্রামে দুই শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় ইউপি সদস্যের বাড়িতে শালিসে বসে ভুল স্বীকার করিয়ে সমাধান করার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, চকঝগড়ু গ্রামের এক প্রবাসী ও এক দিনমজুরের প্রথম শ্রেণীতে পড়ুয়া দুই শিশুকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন মৃত ছেলে তিন সন্তনের জনক জেনারুল হক ওরফে জেনু। ঘটনার প্রায় দুই মাস পর ওই শিশুরা বাসায় জানালে এলাকায় তা জানাজানি হয়ে যায়। পরে নিজ বাড়িতে জেনারুলকে শুধুমাত্র ভুল স্বীকার করিয়ে সমাধান করে দেন ইউপি সদস্য জহরুল ইসলাম।
জানা যায়, শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর ইউপি সদস্যের বাড়িতে এই সালিশ হয়। ইউপি সদস্য জহরুল ইসলামের নেতৃত্বে শালিসদার হিসেবে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, চকঝগড়ু গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে আসিপুরদৌলা টনি, মৃত লালু মুন্সির ছেলে আব্দুল মালেক, অনু মন্ডলের ছেলে রুমেল, মৃত রবু মন্ডলের ছেলে মজিবুর ও দুই শিশুর পরিবারের সদস্যরা।
এক শিশুর মা বলেন, আমার মেয়ে পাশের বাড়ির আরেকটি মেয়ের সাথে খেলা করছিল। এসময় প্রতিবেশী জেনারুল হক ওরফে জেনু সুযোগ বুঝে তাদের দুজনকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। সাথে থাকা আরেক শিশু ও আমার মেয়েকে ঘরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। দুই মেয়ের প্যান্ট খুলে নানরকম অশ্লীল কাজ করে। পরে চিৎকার করলে ছেড়ে দেয়। এমনকি বাসায় কাউকে এসব ঘটনা বললে হাঁসুয়া দিয়ে কেটে ফেলবে ও মারধর করবে বলে ভয়ভীতি দেখায় জেনারুল।
আরেক শিশুর বাবা বলেন, ঘটনা দুই মাস আগের। দুই শিশু কেউই এমন কোন কিছু বাসায় জানায়নি। কারন তাদেরকে অনেক ভয়ভীতি দেখায় জেনারুল। আরেক শিশু তার মাকে জানানোর পর, সেই মহিলা আমাকে জানায়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ইউপি সদস্য মিলে তা বসে শালিস করে দেয়।
ওই দুই শিশু জানায়, নিজের লুঙ্গি খুলে আমাদের সাথে অশ্লীল কাজ করে জেনারুল। দুইজনই চিৎকার চেচামেচি করলে ও হাতে কামড় দিলে আমাদেরকে ছেড়ে দেয়। ঘটনার পর ভয় দেখানোর কারনে বাসায় বলিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা ফয়সাল আজম, তারেক রহমান ও নাদিম হোসেনসহ স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় অনেক আলোচনা, সমালোচনা চলছে। এমন একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিষয়ে কিভাবে ভুল স্বীকার করিয়ে সমাধান হয়? শালিসে সকলের সামনে জেনারুল ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। এর আগেও জেনারুলের এমন ঘটনার একাধিক নজির রয়েছে। আমরা তার উপযুক্ত শাস্তি চাই।
এবিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত জেনারুল হক ওরফপ জেনুর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। ইউপি সদস্য জহরুল ইসলাম নিজ বাড়িতে শালিসের কথা অস্বীকার করেন। তিনি জানান, এবিষয়ে কোন কথা বলতে চাই না। আমি শালিসের কিছুই জানি না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। এমনকি এমন কোন ঘটনার কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।