গাইবান্ধায় স্বাস্থ্যখাতে এখনো সেই পুরানো সিন্ডিকেট নেপথ্যে স্বাচিপ নেতা

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন খাতে পরিবর্তনের হাওয়া লাগলেও গাইবান্ধার স্বাস্থ্যখাতে এখনো রয়ে গেছে আওয়ামী আমলের সেই প্রভাবশালী সিন্ডিকেট

গাইবান্ধায় স্বাস্থ্যখাতে এখনো সেই পুরানো সিন্ডিকেট নেপথ্যে স্বাচিপ নেতা

আশরাফুজ্জামান সরকার, গাইবান্ধাঃ- ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন খাতে পরিবর্তনের হাওয়া লাগলেও গাইবান্ধার স্বাস্থ্যখাতে এখনো রয়ে গেছে আওয়ামী আমলের সেই প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। জেলাজুড়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ও পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন সাধারণ ঠিকাদার ও স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজ। এই সিন্ডিকেটের নেপথ্যে মূল হোতা হিসেবে অভিযোগের আঙুল উঠেছে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) জেলা নেতা ও সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. শাহিনুল ইসলামের দিকে।

আজ রবিবার দুপুর ১২ টায় পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবে জনাকীর্ণ  এক সংবাদ সম্মেলনে ‘সচেতন নাগরিক সমাজ ও আন্দোলনরত ঠিকাদার’বৃন্দের পক্ষে এসব অভিযোগ তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, পলাশবাড়ীসহ জেলার প্রতিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেসার্স মাজেদ ট্রেডার্স, মেসার্স স্বর্ণা এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স লিমন কনস্ট্রাকশন এবং মেসার্স আমেনা ট্রেডার্সের মতো আওয়ামী আমলের ‘কালো তালিকাভুক্ত’ প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো সিন্ডিকেট বজায় রাখার চেষ্টা করছে।

অভিযোগ রয়েছে, ডা. শাহিনুল ইসলাম তার আপন বড় ভাই ও পলাশবাড়ী উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি মাজেদুর রহমানের মালিকানাধীন ‘মাজেদ ট্রেডার্স’কে নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ পাইয়ে দিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন। বিগত ১৫ বছর ধরে এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি বড় অঙ্কের কমিশন বাণিজ্য করেছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।

শর্তের বেড়াজালে নতুনরা বঞ্চিত সম্প্রতি পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহ্বান করা একটি দরপত্র নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, দরপত্রে এমন কিছু ‘অযৌক্তিক ও কঠিন’ শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে যা কেবল ওই নির্দিষ্ট সিন্ডিকেটের অনুকূলে যায়। ফলে নতুন এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ঠিকাদাররা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারছেন না।

আন্দোলনরত ঠিকাদারদের দাবি, ফ্যাসিস্ট আমলের সুবিধাপ্রাপ্ত ঠিকাদারদের পুনরায় কাজ পাইয়ে দিতেই কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এই সাজানো টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বক্তারা বলেন, “দেশ যখন বৈষম্যমুক্ত হওয়ার পথে এগোচ্ছে, তখন স্বাস্থ্যখাতে এই ‘মাফিয়াতন্ত্র’ মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই অবিলম্বে এই সাজানো টেন্ডার বাতিল করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যোগ্যদের সুযোগ দেওয়া হোক।

তারা আরও দাবি করেন, গত ১৫ বছরে গাইবান্ধার স্বাস্থ্যখাতে যত অনিয়ম হয়েছে, তার নিরপেক্ষ তদন্ত করে ডা. শাহিনুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।