বানৌজা শের–ই–বাংলায় শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজে পবিপ্রবি উপাচার্যের বিশেষ অংশগ্রহণ ‎

বর্ণাঢ্য ও মনোমুগ্ধকর কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হলো বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বি/২০২৫ ব্যাচের ৪১৭ নবীন নাবিকের বুটক্যাম্প প্রশিক্ষণের শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠান।

বানৌজা শের–ই–বাংলায় শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজে পবিপ্রবি উপাচার্যের বিশেষ অংশগ্রহণ  ‎

মোঃ সজিব সরদার ‎পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ বর্ণাঢ্য ও মনোমুগ্ধকর কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হলো বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বি/২০২৫ ব্যাচের ৪১৭ নবীন নাবিকের বুটক্যাম্প প্রশিক্ষণের শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠান।

‎সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বানৌজা শের–ই–বাংলা প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান, এনডিসি, এনএপি, এনএলএম, এনবিএসসি, পিএসসি

‎নৌবাহিনীর প্রধানের বিশেষ আমন্ত্রণে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যোগ দেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) উপাচার্য, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম। তিনি অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বে অংশ নেন এবং সামরিক–বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

‎প্রধান অতিথি নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান বলেন—“নবীন নাবিকরা আজ দেশের নৌসুরক্ষার গুরু দায়িত্ব পালনের পথে প্রথম পদক্ষেপ নিল। কঠোর ২২ সপ্তাহের প্রশিক্ষণ তাদের শৃঙ্খলা, দক্ষতা ও পেশাদারিত্বে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।” তিনি প্রশিক্ষক এবং ঘাঁটির আধুনিক অবকাঠামোর প্রশংসা করে নবীন নাবিকদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সতর্কতা, আন্তরিকতা ও মানবিক চেতনায় কাজ করার আহ্বান জানান।

‎অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করে পবিপ্রবি'র উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন—“বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আধুনিক প্রশিক্ষণব্যবস্থা এবং প্রযুক্তির ব্যবহার সত্যিই অনুকরণীয়। পবিপ্রবি ও নৌবাহিনীর মধ্যে প্রযুক্তি, গবেষণা এবং উচ্চশিক্ষায় সহযোগিতার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

‎তিনি আরও বলেন, “সামুদ্রিক নিরাপত্তা, ব্লু ইকোনমি ও নৌপ্রযুক্তি–সম্পর্কিত গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

‎অনুষ্ঠানের শুরুতে সমাপনী প্যারেডে নবীন নাবিকরা অসাধারণ কায়দা, সমন্বয় ও শৃঙ্খলার পরিচয় প্রদর্শন করেন, যা উপস্থিত অতিথিদের মুগ্ধ করে। পরবর্তী পর্যায়ে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী নাবিকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

‎কুচকাওয়াজ শেষে পবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম নৌবাহিনী প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়–নৌবাহিনী যৌথ গবেষণা, প্রযুক্তি উদ্ভাবন, একাডেমিক সহযোগিতা ও সমুদ্রভিত্তিক উচ্চশিক্ষায় সমন্বয়ের নানা দিক উঠে আসে। পরবর্তী সময়ে তিনি নৌবাহিনী আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন এবং দুপুরে ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন।

‎অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী সদর দপ্তরের পিএসওরা, ঊর্ধ্বতন সামরিক–বেসামরিক কর্মকর্তা, পটুয়াখালী–বরিশাল–খুলনা অঞ্চলের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং নবীন নাবিকদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

‎নৌবাহিনী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সমাপনী প্যারেডের নিরাপত্তা, যাতায়াত ও সার্বিক আয়োজন ছিল সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন।

‎উল্লেখ্য, ৫১৫ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত বানৌজা শের–ই–বাংলা নৌঘাঁটি ২০২৩ সালের ১২ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। 

বর্তমানে এটি দেশের বৃহত্তম নৌঘাঁটি, যেখানে নৌবাহিনীর বুটক্যাম্প প্রশিক্ষণ পরিচালিত হয়। এ পর্যন্ত পাঁচটি ব্যাচ সফলভাবে প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করেছে।