দীর্ঘ ২৩ বছর পরে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সম্মেলন
দীর্ঘ ২৩ বছর পরে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন স্নেহাংশু সরকার কুট্টি এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন এ্যাড. মজিবুর রহমান টোটন।

মোঃ সরদার সরদার পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ দীর্ঘ ২৩ বছর পরে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন স্নেহাংশু সরকার কুট্টি এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন এ্যাড. মজিবুর রহমান টোটন।
গত বুধবার(২ জুলাই) রাতে সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে গোপন ব্যালটের ভোটের মাধ্যমে তারা নির্বাচিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান এ্যাড. আব্দুল হক ফরাজী।
এর আগে বুধবার দিনভর পটুয়াখালী শহরের জিমনেসিয়াম চত্তরে উৎসবমুখর পরিবেশে বিএনপির ত্রি-বার্ষিক জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা ১১টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তৃতা দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নির্বাহীর কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক জেলা সভাপতি এয়ার ভাইস মার্শাল(অবঃ) আলতাফ হোসেন চৌধুরী।
দুপুরের পর দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে সন্ধ্যা ৬টায়। গোপন ব্যালটে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে রাত ১১টা পর্যন্ত।
পরে গভীর রাতে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান এ্যাড. আব্দুল হক ফরাজী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য মো. মশিউর রহমান ও মো. নাসির উদ্দিন।
আব্দুল হক ফরাজী বলেন- বিএনপির জেলা, উপজেলা ও পৌর কমিটির মোট ১৪টি ইউনিটের ১ হাজার ৫১১ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১ হাজার ১৭২ জন কাউন্সিলর তাদের গোপন ভোটে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করেছেন।
এর মধ্যে সভাপতি পদে স্নেহাংশু সরকার কুট্টি পেয়েছেন ৭৫৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাকসুদ আহমেদ বায়েজিদ(পান্না মিয়া)পেয়েছেন ৪০২ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে ছয় জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে ৪৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন এ্যাড. মোঃ মজিবুর রহমান টোটন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ বশির আহমেদ মৃধা পেয়েছেন ৪২০ ভোট। মোঃ মনিরুল ইসলাম লিটন ১৬২।এ্যাড. তৌফিক আলী খান কবির ৮৪।দেলোয়ার হোসেন খান নান্নু ১৩। সাইদুর রহমান তালুকদার (সাঈদ তালুকদার) পেয়েছেন ৪ ভোট।
এর আগে সর্বশেষ ২০০২ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়েছিল, যার সভাপতি ছিলেন আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন স্নেহাংশু সরকার কুট্টি।
পরে ২০০৯ সালে সেই কমিটি বিলুপ্ত করে আব্দুর রশিদ চুন্নু মিয়াকে আহ্বায়ক করে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
এরপর ২০১২ সালে সম্মেলন ছাড়াই আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে পুনরায় সভাপতি এবং এম.এ. রব মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি আংশিক কমিটি গঠিত হয়।
সর্বশেষ ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় আব্দুর রশিদ চুন্নু মিয়া ও সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টিকে।
বৃহস্পতিবার সকালে নবনির্বাচিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মোঃ মজিবুর রহমান টোটন মানবাধিকার প্রতিদিন কে বলেন, “দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।
তারেক রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “ইনশাল্লাহ, আমার উপর যে গুরু দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে তা আমি ঈমানের সঙ্গে পালন করব।
দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমরা সবাই মিলেমিশে কাজ করতে চাই। সবাই এক ছাতার নীচে এসে কাজ করতে চাই, সংগঠনের কার্যক্রম যাতে জোরদার হয়। এছাড়া সংগঠন পরিপন্থি কোনো কাজ যেন কেউ না করে নেতা-কর্মীর প্রতি সে আহ্বান থাকবে আমার।
উল্লেখ্য, বরিশাল বিভাগে এটাই প্রথম পটুয়াখালী জেলা বিএনপি'র সম্মেলন, যেখানে সরাসরি গোপন ব্যালটের ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত হলো। নতুন নেতৃত্ব দায়িত্ব গ্রহণের পর জেলার বিএনপি রাজনীতিতে কী পরিবর্তন আসে, তা এখন দেখার অপেক্ষা।