টাকা নেই-পদ্মা ব্যাংক দুমকি শাখায় গ্রাহকদের চরম ভোগান্তি
পটুয়াখালীর দুমকিতে পদ্মা ব্যাংকের গ্রাহক ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই শাখায় গিয়ে জমাকৃত টাকা তুলতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন গ্রাহকেরা
মোঃ সজিব সরদার পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর দুমকিতে পদ্মা ব্যাংকের গ্রাহক ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই শাখায় গিয়ে জমাকৃত টাকা তুলতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন গ্রাহকেরা। বিশেষ প্রয়োজন, চিকিৎসা কিংবা ব্যবসায়িক লেনদেন—কোনো ক্ষেত্রেই তারা নিজস্ব টাকা উত্তোলন করতে পারছেন না। এতে চরম অনিশ্চয়তা ও ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ গ্রাহকের মধ্যে।

জানা যায়, উপজেলা সদরে অবস্থিত পদ্মা ব্যাংকের দুমকি শাখায় প্রায় ৪ হাজার গ্রাহক নিয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর দেশের অন্যান্য দুর্বল ব্যাংকের মতো পদ্মা ব্যাংকের লেনদেনও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। ব্যাংকের দুর্বলতার খবর গ্রাহকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে নতুন টাকা জমা দেওয়া বন্ধ করে দেন তারা। ফলে লেনদেন সংকট আরো বাড়ে। এখন গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা ফেরত দিতে পারছে না ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের বাহেরচর থেকে আশা গ্রাহক মোঃ জসিম উদ্দিন কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন,“সুবিধা অসুবিধায় ব্যবহার করবো ভেবে প্রায় ৫ লাখ টাকা জমা রাখি। এখন চিকিৎসার জন্য জরুরি টাকা দরকার, কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে তারা টাকা দিতে পারবে না। আমি খুবই অসহায়।
লেবুখালি থেকে আশা গ্রাহক মোঃ রিপন জানান,“দেড় হাজার টাকা খরচ করে ১০ মাসে মাত্র দুই হাজার টাকা তুলতে পেরেছি। অফিসাররা বলেন—টাকা নেই, যখন আসবে তখন দিবো।
শ্রীরামপুরের গ্রাহক মফিজ গাজী বলেন,“আমার দুই প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্য কিছু টাকা রেখেছিলাম। প্রয়োজনে এখন সেই টাকা পাচ্ছি না। খুব বিপদে আছি।
পিরতলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইদুর রহমান খান বলেন,“ব্যাংকে টাকা রেখেছি ব্যবসার প্রয়োজনে। এখন টাকা পেতে না পেরে ব্যবসা পরিচালনায় মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে।

দুমকি নতুন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম সহিদ সরদার বলেন,“পদ্মা ব্যাংকে আমার কিছু টাকা আটকে আছে। তারা টাকা দিতে না পারায় ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক লেনদেন থমকে গেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন,“আমার বেশ কিছু টাকা জমা আছে। ব্যাংক টাকা না দেওয়ায় ব্যবসায়িক ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে।
এ বিষয়ে পদ্মা ব্যাংক দুমকি শাখার ব্যবস্থাপক শাহিনুর আক্তারসহ ব্যাংকটির পাবলিক রিলেশন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
দ্রুত স্বাভাবিক ভাবে আর্থিক লেনদেন চালু না হলে ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়দের চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন নাগরিকরা। গ্রাহকরা বলেন—“এই পরিস্থিতি দীর্ঘ হলে আমরা পথে বসে যাবো।



