নাসিরনগরে পহেলা বৈশাখে বিনিময় প্রথা ও ঐতিহ্যবাহী শুঁটকি মেলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে শতাধিক বছরের বিনিময় প্রথা ও দুই দিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী শুঁটকি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সুজিত কুমার চক্রবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে শতাধিক বছরের বিনিময় প্রথা ও দুই দিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী শুঁটকি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সরকারি ভাবে বাংলা নববর্ষ ১৪ এপ্রিল সোমবার পালিত হয়েছে। পঞ্জিকা তারিখ অনুযায়ী ১লা বৈশাখ ১৫ এপ্রিল মঙ্গলবার নাসিরনগর সদরে লঙ্গন নদীর তীরে ( মহাখালপাড়া) ও কুলিকুন্ডা গ্রামে হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী শুটকি মেলা ও বিনিময় প্রথা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১ লা বৈশাখ উপলক্ষে ভোর হতে না হতেই মহিলারা এক পণ্যের বিনিময়ে অন্য পণ্য বিনিময় মাধ্যমে ক্রয় করে। শুটকির বিনিময়ে আলু, ডাল, সরিষা, পিয়াজ, রসুন, মরিচ, আম,তরিতরকারি সহ কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের বিনিময় করা হয়। যতই সময় যায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাহারি রকমের শুটকি ব্যবসায়ী সকল জাতের শুটকি মেলায় নিয়ে বসে দোকানিরা। এই মেলায় বোয়াল, গজার,শোল, বাইম,ছুড়ি, লাইট্টা, আইর, রুই, কাতল, টেংরা,পুঁটিসহ নানান জাতের দেশীয় মাছের শুটকি ও বিভিন্ন মাছের ডিমের শুটকি উঠেছে। মেলার কমিটি ও গ্রামবাসী জানায়, ১লা বৈশাখ উপলক্ষে মেলাটি কুলিকুন্ডা গ্রামের হাজার বছরের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।
আদিম কাল থেকে ১লা বৈশাখ উপলক্ষে মেলাটি শুরু হয়। দুইদিন ব্যাপী মেলায় পার্শ্ববর্তী এলাকা ছাড়াও সিলেট,সুনামগঞ্জ এবং চট্টগ্রাম জেলার ব্যবসায়ীরা হাওর, নদী ও সামুদ্রিক বিরল জাতের প্রজাতি মাছের শুটকি নিয়ে আসে। ক্রেতারা লক্ষ লক্ষ টাকার শুটকি ক্রয় করে বাড়িতে নিয়ে যায়। তাছাড়াও মৎ শিল্পীদের হাতের তৈরী হাঁড়ি, পাতিল, কলস, বাসের থালা, ঘটি,বাটি, থালা, পুতুল সহ নানান রখমের খেলনা, নাগরদোলা মেলাকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। উপজেলা প্রশাসন ও গ্রামের লোকজন মিলে সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখেছে। মেলার শেষ দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহীনা নাছরিন মেলা পরিদর্শন কালে নিজের হাতে শুটকি ও বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করেন। দুই দিন ব্যাপী উক্ত মেলায় হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটেছে।