২০০ আসনে বিজয়ী হলেও গঠন করব জাতীয় সরকার

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘২০০ আসনে এককভাবে বিজয়ী হলেও দেশের স্বার্থ ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে জামায়াত জাতীয় সরকারই গঠন করবে

২০০ আসনে বিজয়ী হলেও গঠন করব জাতীয় সরকার
সংগ্রহীত ছবি

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘২০০ আসনে এককভাবে বিজয়ী হলেও দেশের স্বার্থ ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে জামায়াত জাতীয় সরকারই গঠন করবে।’ গতকাল রাজধানীর গুলশানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা জানান। বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা সমস্যা, সবার নিরাপত্তা, নির্বাচনী ইশতেহার ও নির্বাচন-পরবর্তী ১০০ দিনের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চান। এ সময় জামায়াত আমির তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, ক্ষমতায় এলে তার দল ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ’ গড়ে তুলবে।

জামায়াত আমির বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক শক্তিকে বাদ দেব না। দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা, আইনের শাসন নিশ্চিত এবং দুর্নীতি রোধে আগামী পাঁচ বছর জাতীয় সরকার প্রয়োজন।’

নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে ভোটারদের সচেতনতা এখন পর্যাপ্ত নয়; একই দিনে দুটি ভোট গ্রহণ হলে উভয় প্রক্রিয়ার ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি থাকে।’ তাই দুটি নির্বাচন আলাদা করার পরামর্শ দেন তিনি।

ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, ‘আমরা মনে করি নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই, ফেব্রুয়ারিতেই হওয়া উচিত।’

সংখ্যানুপাতিক (পিআর) ভোটব্যবস্থার প্রতি দলের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, জনগণের স্বার্থেই এ পদ্ধতির দাবি জানানো হয়েছে এবং ক্ষমতায় গেলেও পিআর বাস্তবায়নে থাকবেন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহারের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ধর্ম তাঁদের চিন্তা ও চেতনার অংশ, ব্যবহার করার উপকরণ নয়। ‘আমরা ধর্মকে কাজে লাগাই না; যারা নির্বাচন এলে টুপি-তসবিহ নিয়ে হাজির হন, তারা ধর্মকে ব্যবহার করেন’, মন্তব্য করেন তিনি।

ইইউ প্রতিনিধিদলে রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন, জার্মানির রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোট্জ, ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো, ফ্রান্সের উপরাষ্ট্রদূত ফ্রেদেরিক ইনজা, নেদারল্যান্ডসের উপরাষ্ট্রদূত থাইস উডস্ট্রা, ইইউর উপরাষ্ট্রদূত গং. বেইবা জেরিনা, ইইউ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি সেবাস্টিয়ান রাইগার-ব্রাউন উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, শিক্ষাবিদ ও গবেষক প্রফেসর মোকাররম হোসেন ও জুবায়ের আহমেদ এবং জামায়াত আমিরের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান।

এর আগে গতকাল সকালে বসুন্ধরার কার্যালয়ে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রুনাইয়ের হাইকমিশনার হাজি হারিস বিন ওসমান সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি রোজাইমি আবদুল্লাহ।

সাক্ষাৎকালে ২০২৪-এর গণবিপ্লবসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামীর গঠনমূলক ভূমিকা তুলে ধরা হয়।

ভ্রাতৃপ্রতিম দুই দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি ভবিষ্যতে আরও জোরদার হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। বৈঠকে জামায়াত আমিরের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র_কালের কন্ঠ