শেখ হাসিনার রায়ের পর সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনার রায়ের পর সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার
সংগ্রহীত ছবি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রায় পরবর্তী নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যে কোনো বিশৃঙ্খলা এড়াতে সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, নাশকতা কিংবা অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটলে কাউকে বরদাস্ত করা হবে না। আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করা হবে।

এদিকে সোমবার সকাল থেকে শেখ হাসিনার রায়কে ঘিরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। রায়ের পরও কড়াকড়ি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ও মোড়ে মোড়ে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট মোতায়েন রয়েছে।

রায় পরবর্তী চোরাগোপ্তা হামলা কিংবা নাশকতার চেষ্টা করা হলে কঠোর অবস্থানে থাকবে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ। সে অনুযায়ী তাদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

এদিকে, ঢাকাবাসীর নিরাপত্তায় রাজধানীতে প্রায় ১৫ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী মানুষ, পুলিশ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ এবং ককটেল নিক্ষেপকারীদের ওপর গুলির নির্দেশ দেন।

ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত আলী বলেন, যারা মানুষ ও পুলিশ সদস্যদের ওপর ককটেল হামলা এবং যানবাহনে আগুন দেবে, আইনসম্মতভাবেই তাদের ওপর গুলির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি রাজনৈতিক দল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য ককটেল বিস্ফোরণসহ যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মতো ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমে লিপ্ত। গত ২৪ ঘণ্টায় তাদের ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আমরা আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করবো।

তিনি বলেন, রায় পরবর্তী কোনো শঙ্কা নেই। তবে মানুষকে নিরাপত্তা দিতে এবং জননিরাপত্তা বজায় রাখতে পুলিশ সর্বোচ্চ সচেষ্ট থাকবে।

র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, রায় ঘোষণার আগে থেকে ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় র্যাবের টহল জোরদার করা হয়েছে। চেকপোস্টের পাশাপাশি সন্দেভাজনদের তল্লাশি চলছে। পাশাপাশি র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা টিম গোয়েন্দা নজরদারি চালাচ্ছে। এর সঙ্গে গুজব প্রতিরোধে সাইবার জগতেও র্যাব নজরদারি রেখেছে।

জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, সারাদেশে পুলিশের পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে। টহল, চেকপোস্ট ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নাশকতা এবং চোরাগোপ্তা হামলা ঠেকাতে সারাদেশে কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ সক্ষম।

এর আগে এদিন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আর পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন—বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

চাঁপাই প্রেস/সূত্র_জাগো নিউজ