হবিগঞ্জে স্কুলছাত্র জনি দাশকে ছুরিকাঘাতে হত্যা: মানববন্ধন ও প্রতিবাদ এলাকায় উত্তেজনা 

হবিগঞ্জ শহরের ডাকঘর এলাকার দেয়ানত সাহার বাড়ি সংলগ্ন স্থানে ছুরিকাঘাতে জনি দাশ (১৭) নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছেন

হবিগঞ্জে স্কুলছাত্র জনি দাশকে ছুরিকাঘাতে হত্যা: মানববন্ধন ও প্রতিবাদ এলাকায় উত্তেজনা 

স্বপন রবি দাশ হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:হবিগঞ্জ শহরের ডাকঘর এলাকার দেয়ানত সাহার বাড়ি সংলগ্ন স্থানে ছুরিকাঘাতে জনি দাশ (১৭) নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ভোরে নিজ বাসার সামনেই এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হন তার বড় ভাই জীবন দাশ (২২)। তিনি বর্তমানে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নিহত জনি দাশ হবিগঞ্জ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তার বড় ভাই জীবন দাশ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোর ৪টার দিকে বাড়ির পাশে সন্দেহজনক শব্দ পেয়ে বাইরে যান জনি। কিছুক্ষণ পর তাঁর চিৎকার শুনে বড় ভাই জীবন দাশ ছুটে গিয়ে দেখেন, জনির সঙ্গে এক অজ্ঞাত যুবকের ধস্তাধস্তি চলছে। জীবন দাশ বাধা দিতে গেলে ওই যুবক ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। জনিকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় হামলাকারী। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক জনিকে মৃত ঘোষণা করেন।

হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সজল সরকার জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি ছুরি, টর্চলাইটসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত জনির শরীরে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অণ্ডকোষে গুরুতর আঘাতজনিত রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।

এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি এবং কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে পুলিশ জানায়।

ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ সুপার এ এম এ এন সাজেদুর রহমান, স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন সেলিমসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বর্তমানে জেলা পুলিশ, র‍্যাব, ডিবি, পিবিআই এবং সেনাবাহিনীর যৌথ দল তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হামলাকারীকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

বিকেলে নিহত জনির মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং সন্ধ্যায় স্থানীয় শ্মশানে তার দাহ সম্পন্ন হয়। এর আগে উপপরিদর্শক (এসআই) আওলাদ হোসেন ও বিশ্বজিৎ দাশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন।

এ নির্মম হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।