জানুয়ারিতে নির্বাচন চায় গণ অধিকার পরিষদ

দেশের বর্তমান পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে আগামী জানুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায় গণ অধিকার পরিষদ

জানুয়ারিতে নির্বাচন চায় গণ অধিকার পরিষদ
সংগ্রহীত ছবি

দেশের বর্তমান পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে আগামী জানুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায় গণ অধিকার পরিষদ। সোমবার (২০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানুয়ারিতেই নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, যেহেতু জাতীয় জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করে আইনগত ভিত্তি প্রদান করুন। আমরা লক্ষ্য করছি, নির্বাচন বানচালের জন্য সাম্প্রতিককালে অগ্নিসংযোগে লিপ্ত হয়েছে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা।

এভাবে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে আরেকটি ১/১১ সৃষ্টির চক্রান্ত শুরু হয়েছে। 

তিনি বলেন, নির্বাচন যত দেরিতে হবে, ষড়যন্ত্র তত বাড়বে। সুতরাং আগামী জানুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করার আহ্বান করছে গণ অধিকার পরিষদ। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিবেশ তৈরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সেই পরিবেশ তৈরি করার জন্য ১৪, ১৮ ও ২৪ সালের নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা, ডিসি, এসপি, ইউএনও ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

রাশেদ খান আরো বলেন, বর্তমান প্রশাসনকে পরিবর্তন না করলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভবপর নয়। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে পরিষ্কার করতে হবে, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেউ নির্বাচনে 'ডামি মামি' স্বতন্ত্র, অন্যদলের হয়ে কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলও নির্বাচন করতে পারবে না।

আওয়ামী লীগের মতো তাদেরও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলন অত্যন্ত যৌক্তিক আন্দোলন। শিক্ষকদের দাবি মেনে না নিলে তাদের সঙ্গে নিয়ে যমুনা-সচিবালয় ঘেরাও করা হবে। শিক্ষকদের কষ্ট করে কোনো উপদেষ্টা গদিতে থাকতে পারবে না। সুতরাং কালক্ষেপণ না করে তাদের দাবি মেনে নিন।

লিখিত বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র হাসান আল মামুন বলেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গণঅধিকার পরিষদ গভীর উদ্বিগ্ন। বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যেসব অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানায় গণঅধিকার পরিষদ। গণঅধিকার পরিষদ মনে করে, পতিত স্বৈরাচার দেশ অস্থিতিশীল করতে এসকল অগ্নিকাণ্ড ঘটাতে পারে। তাই সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে বিষয়টি সঠিক তদন্তের আহ্বান জানায় গণঅধিকার পরিষদ। এ ছাড়া দেশের বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের আহ্বান জানায় গণঅধিকার পরিষদ।

সংবা্দ সম্মেলনে বলা হয়েছে, ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে, এটি দ্রুত বাস্তবতান চায় গণঅধিকার পরিষদ। আমরা শুরু থেকেই এই সরকারকে একনিষ্ঠভাবে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে আসছি। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, সরকার সেই আশার প্রতিফলন দেখাতে পারেনি। আইনশৃঙ্খলাসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অবনতির দিকেই যাচ্ছে।

বিগত শেখ হাসিনা সরকার এ দেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছিল। আমরা দেশে আর কোনো বিশৃঙ্খলা দেখতে চাই না। তাই আগামী জানুয়ারি মাসেই জাতীয় নির্বাচন দিয়ে, নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানায় গণ অধিকার পরিষদ। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, অ্যাডভোকেট সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিলু খান, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম আজহার ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রিদওয়ান উল্লাহ খান প্রমুখ।

চাঁপাই প্রেস/সূত্র_কালের কন্ঠ