অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির এর বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

বুড়িচং কুমিল্লা প্রতিনিধি:কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির এর বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক বিবৃতিতে তিনি বিষয়টি পরিষ্কার করে বলেন, দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তিনি সব সময় আইন-কানুন এবং নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনাকেই প্রাধান্য দেন।
তিনি জানান, ২০২৪ সালের ২৭ মার্চ থেকে বুড়িচং উপজেলায় তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। এই সময়ের মধ্যে শতভাগ আইনবিধি অনুসারে কাজ করে আসছেন। বিশেষ করে এনআইডি সংক্রান্ত যেকোনো অনিয়ম প্রতিরোধে কঠোর ভূমিকা রাখছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে বুড়িচংয়ে বয়স বাড়িয়ে নতুন এনআইডি কার্ড তৈরির প্রবণতা বাড়ছে। অনেকেই নতুন জন্মনিবন্ধন তৈরি করে বয়স দুই থেকে চার বছর বাড়িয়ে আবেদন জমা দিচ্ছেন। এছাড়া অনলাইনে একাধিক জন্মসনদ ব্যবহারসহ নানা অনিয়ম ধরা পড়ছে। এসব ক্ষেত্রে সঠিক কাগজপত্র যাচাইয়ের পরই আবেদন গ্রহণ করা হয়, অন্যথায় তা বাতিল হয়।
তিনি বলেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর তিনি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রশিক্ষণে ছিলেন। এ সময় সাংবাদিক পরিচয়ে মারুফ নামে এক ব্যক্তি মোবাইল ফোনে অন্য একজনের আইডি আবেদন রাখার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু বয়স নিয়ে সন্দেহ থাকায় অফিসের কর্মচারীরা তা রাখতে অস্বীকৃতি জানান। পরবর্তীতে আবারো ফোন করলে তিনি এসে যাচাই করবেন বলে জানান।
পুনরায় ২৯ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক মারুফ আবেদনকারীকে নিয়ে আসেন। যাচাই-বাছাই ও সাক্ষাৎকারে দেখা যায় আবেদনকারীর বয়স বাড়ানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের রেজিস্টার থেকে তথ্য আনার নির্দেশ দিলে আবেদনকারী চলে যান। এরপর রাতেই সাংবাদিক মারুফ ফেসবুক লাইভে এসে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অসত্য তথ্য প্রচার করেন।
মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, “শুধুমাত্র অনৈতিক সুবিধা না পেয়েই প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
এদিকে বুড়িচং উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে সেবা নিতে আসা কয়েকজন সাধারণ নাগরিক নির্বাচন কর্মকর্তার সততার প্রশংসা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষক মফিজুল ইসলাম বলেন, “আমি আমার মেয়ের এনআইডি করার জন্য অফিসে গিয়েছিলাম। কোনো দালালের সাথে যোগাযোগ করিনি। সরাসরি কাগজপত্র জমা দিয়েছি। কর্মকর্তারা সঠিকভাবে যাচাই করে দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করেছেন। কোনো প্রকার ঘুষ বা অনৈতিক সুবিধার ইঙ্গিত পাইনি।
ময়নামতি এলাকার জসিম উদ্দিন জানান, “আমার এনআইডিতে আমার নাম ভুল ছিল। হুমায়ুন কবির স্যার নিজে সেটা ঠিক করার জন্য পরামর্শ দেন এবং আইনি প্রক্রিয়ায় আবেদন জমা দিতে বলেন। উনি কাউকে অবৈধভাবে সাহায্য করেন না, বরং সঠিক পথে কাজ করার পরামর্শ দেন।
অন্যদিকে নারী সেবা গ্রহীতা সেলিনা আক্তার বলেন, “আমি আমার জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা সংশোধনের জন্য আবেদন করি। অফিস থেকে আমাকে খুব সুন্দরভাবে সহযোগিতা করা হয়। উনি সবসময় বলেন কাগজপত্র ঠিক থাকলে সমস্যা হবে না।
মোঃ হুমায়ুন কবির আরো বলেন, আবেদনকারীদের অবশ্যই সঠিক কাগজপত্র নিয়ে সরাসরি অফিসে আসতে হবে। কোনো দালাল বা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বয়স বাড়ানো কিংবা অন্য কোনো অনৈতিক সুবিধা নিতে এলে তা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না।
এ বিষয়ে মারুফ জানান, তার মামাতো ভাইয়ের একটি এন আই ডি কার্ড করানোর জন্য তিনি যান। এ সময় নির্বাচন কর্মকর্তা তার বয়স নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে সনদপত্র আনতে বলেন। তিনি মানুষকে হয়রানি করছেন, এখন থেকে প্রতিমাসে তার (মারুফের) তিন থেকে চারটি কাজ করে দিতে হবে। কোন প্রকার যাচাই-বাছাই ছাড়াই ফাইল হাতে পাওয়ার সাথে সাথে কাজ করে দিতে হবে, না হলে সমস্যা হবে।