জাতীয় নির্বাচন ঘিরে নওগাঁ-১আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী-৫ জন জামাতের প্রার্থী চুড়ান্ত 

নওগাঁ জেলায় ১১উপজেলা নিয়ে সংসদীয় আসন ছয়টি। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারির মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে এমন ঘোষণার পর থেকেই নওগাঁ -১ আসনে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে

জাতীয় নির্বাচন ঘিরে নওগাঁ-১আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী-৫ জন জামাতের প্রার্থী চুড়ান্ত 

তৈয়বুর রহমান নিয়ামতপুর নওগাঁ প্রতিনিধিঃনওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহার তিনটি উপজেলার সম্বনয়ে একটি আসন নওগাঁ -১। এই আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়নের আশায় মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। অনেকে এখনও নির্বাচনী প্রচারে না নামলেও ভেতরে-ভেতরে ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে বিএনপির মধ্যে প্রার্থীজট রয়েছে। তবে এই আসনে জামায়াত তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে।

নওগাঁ জেলায় ১১উপজেলা নিয়ে সংসদীয় আসন ছয়টি। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারির মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে এমন ঘোষণার পর থেকেই নওগাঁ -১ আসনে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সরব হয়ে উঠেছেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরা। সামাজিক, ধর্মীয় ও ক্রীড়া অনুষ্ঠান, ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়, দরিদ্র সহায়তা, লিফলেট বিতরণসহ নানা কৌশলে ভোটারদের মন জয় করতে ব্যাস্ত সময় পার করছে সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহার নিয়ে নওগাঁ -১ আসনে বিএনপির রয়েছে সামাজিক ও দলীয় বিভাজন। তবে জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত এবং একক প্রার্থী চুড়ান্ত করেছে দলটি।

বিএনপি কেন্দ্রীয় ভাবে এখনও দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। এই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য এক হালির ও বেশী প্রার্থী নিজেদের জনপ্রিয়তা ও রাজনৈতিক অবস্থান তুলে ধরে কয়েক মাস ধরে প্রচার চালাচ্ছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই জোরেশোরে নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ ও সভা-সমাবেশ করছেন। মাঠ পর্যায়ে এই দুই দলের পাশাপাশি এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ অন্য দলের তেমন উল্লেখযোগ্য প্রচার এ আসনে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

(নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহার) নওগাঁ-১ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন ৬জন। তারা হলেন–সাবেক তিন বারের সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. ছালেক চৌধুরী, নিয়ামতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান, পোরশা বিএনপির সভাপতি মোজাম্মেল হক চৌধুরী, সাবেক সদস্য কেন্দ্রীয় যুবদল মাহমুদুস সালেহীন ও পোরশা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক লায়ন মাসুদ রানা । এ আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম। 

নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহারে নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি ও জামায়াতই সবচেয়ে বেশি সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। স্থানীয়দের মতে, তৃণমূল পর্যায়ে এই দুই দল দীর্ঘদিন ধরে কাঠামোগত সংগঠন ধরে রাখতে পেরেছে বলেই এত দ্রুত মাঠে নামতে পেরেছে। তাছাড়া নতুন আত্মপ্রকাশ করা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন কিংবা এবি পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা চোখে পড়েনি।

এ আসনের রাজনীতি মূলত বিএনপি ও জামায়াত ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে। রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হলেও মাঠপর্যায়ের তৎপরতায় এই দুই দলের সক্রিয়তা বর্তমান প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে দৃশ্যমান। নির্বাচনী তপশিল ঘোষণার পর যদি অন্য দলগুলো মাঠে নামে, তখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও জমে উঠবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সাবেক সদস্য কেন্দ্রীয় যুবদল মাহমুদুস সালেহীন বলেন, রাজনীতি মানে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। বিএনপি বড় দল। মনোনয়ন নিয়ে প্রতিযোগিতা থাকবে, এটিই স্বাভাবিক। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে সবাই তাঁর জন্য কাজ করবে। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমি বিশ্বাস এটি গণমানুষের দল। আমি একজন প্রার্থী হিসেবে নয়, বরং একজন কর্মী হিসেবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শকে অন্তরে ধারণ করে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ত্যাগ ও সংগ্রামকে ভালোবেসে এবং দেশনায়ক তারেক রহমান সাহেবের নেতৃত্বকে বিশ্বাস করে পথ চলতে চাই। 

নিয়ামতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীতা করেছি। এর ধারাবাহিকতায় আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে নওগাঁ-১ আসনের একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী। ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে একাধিক বার ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে আপামর জনসাধারণের সাথে বিএনপির রাজনীতি করে আসছি। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে বিএনপির হাল ধরে

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহারে বিএনপিকে সুসংগঠিত করতে সর্বাত্বক কার্যক্রম পরিচালিত করেছি। 

সাবেক সাংসদ ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. ছালেক চৌধুরী বলেন, আমি গত ২০০৮ সাল থেকে গরীব দুখী ও মেহনতী মানুষকে সকাল বিকাল নিরলস ভাবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। এর পাশাপাশি এলাকার আপামরসাধারণ মানুষের সাথে নিয়োমিত গণসংযোগ করে আসছি এবং তাদের সুখে ও দুখে পাশে থেকেছি। বিগত সময়ে মানুষের আস্থা আর ভালবাসা নিয়ে তিনবার সংসদ সদস্য হয়ে এলাকার রাস্তা-ঘাট, মসজিদ-মন্দির, স্কুল-কলেজসহ এলাকার অধিকাংশ কাঁচা রাস্তা পাকা করনের উন্নয়ন করেছি। আমার নির্বাচনী এলাকা ক্ষুদা ও দারিদ্র মুক্ত করতে চাই। আমি এবারও আগামী ত্রয়োদশ নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার দেশের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিনত করে পালিয়ে গেছে। আগামী ত্রয়োদশ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আবারও বিশ্ব দরবারে মাথা উচু করে দাঁড়াবে।